Thursday 26 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি, সেই সময়ও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ জুন ২০২৫ ১৭:৪৬ | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ১৮:৫১

সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি

ঢাকা: শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, কোন নির্বাচন বিতর্কিত মুক্ত বলুন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালেও কিন্তু মানুষকে পথে আটকে নমিনেশন দিতে দেওয়া হয়নি। ক্ষমতার লোভ এমন যে শেখ মুজিবও তা সামলাতে পারেননি। সেই সময়ও কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল ‘কোন নির্বাচন বিতর্কিত মুক্ত বলুন। দেশ স্বাধীনের পর ’৭২-এর সংবিধান প্রণয়নের তিন মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত ’৭৩ এর নির্বাচনে আ.লীগ ২৯৩টি আসন পায়। সেই নির্বাচনও সুষ্ঠু ছিল না। মানুষকে পথে আটকে নমিশন দিতে দেওয়া হয়নি। ক্ষমতার লোভ এমন যে শেখ মুজিবও তা সামলাতে পারেননি। এ ছাড়া, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করে। পরবর্তী সময়ে তারাই আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সংবিধান সংশোধন করে।’ এ সময় হাবিবুল বলেন, ‘এক হাজার বছরেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, যদি না কিছু মৌলিক সংস্কার করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় বিচারক বলেন, ‘আপনি তো সংবিধানের শপথ নিয়েছিলেন। আপনি কি মনে করেন না নির্বাচন ডামি ও প্রহসনের হয়েছে।’ এর উত্তরে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি মনে করি নির্বাচন ডামি ও প্রহসনের হয়েছে। তবে এতে আমার কোনো দোষ নেই। ওই সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন ছিল। কারণ, দলীয় সরকারের সময় নির্বাচন করা কঠিন।’ তখন বিচারক বলেন, ‘তাহলে আপনি কেন পদত্যাগ করেননি।’ এর উত্তরে হাবিবুল বলেন, ‘ওই সময় পদত্যাগ করার সুযোগ ছিল না।’ ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আগে যখন গভীর রাতে ভোট (একাদশ) হয়। আমি নিজেও সে সময় একটা জায়গায় দায়িত্বে ছিলাম। ভোটের আগের দিন আমি ঘুমিয়েছিলাম। দুইদিন পর জানলাম রাতে ভোট হয়েছে। আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানি না।’

এ সময় ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘নিজে সাধু সাজার জন্য অন্যের দোষ দিয়ে লাভ নেই। অন্যরা কী করেছে তার জন্য আপনি কি সাধু? আপনি কী করেছেন সেটা বলেন।’ এ সময় বিচারকের উদ্দেশে পিপি বলেন, ‘একজন আসামি এত কথা বললে অন্যরা কখন বলবে। উনি নিজেকে জাস্টিফাই করতে চাচ্ছেন, সেটার সুযোগ নেই।’ তখন হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘জাস্টিফাই করতে না দিলে একটা রিভলবার নিয়ে আমাকে মেরে ফেলুন।’

এ সময় উপস্থিত আইনজীবীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে এজলাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিকে শুনানি শেষে আদালত আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন নুরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে বুধবার ২৫ জুন রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

কাজী হাবিবুল আউয়াল টপ নিউজ শেখ মুজিব সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর