সিলেট: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের সকল স্তরে বর্তমানে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে এবং সারাদেশে জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এই দুর্ভোগ দ্রুত নিরসন না হলে তা আরও বাড়বে। এ কারণেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাড়াতাড়ি হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘এর মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দক্ষতার প্রমাণ জাতি যাচাই করতে পারবে। স্থানীয় সরকারের চারটি স্তরের কোথাও বর্তমানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। কিছু ইউনিয়ন পরিষদে জনপ্রতিনিধি থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা সঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না ‘
শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় সিলেটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আমিরে জামায়াত। এ সময় বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আলোচিত নানা বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ এক চরম ভোগান্তির মাঝে রয়েছে। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে শুধু সরকারের নয়, রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে একটি নির্বাচনি মোর্চা গঠনের জোর তৎপরতা চলছে। জামায়াত এর গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ক পার্টনার’ হিসেবে কাজ করছে। এই মোর্চা ক্ষমতা ধারণ বা গ্রহণ করার জন্য নয়, বরং মানবতার মুক্তি, আল্লাহর কোরআন এবং আখেরাতের নাজাতের জন্য।’
এর আগে তিনি নগরীর কুদরত উল্লাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে ‘অর্থসহ আমপারা মুখস্থ প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণী’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। নূর ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদের সম্পাদক মুকতাবিস উন নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি কোরআনকে জানার সঙ্গে মানার সম্পর্ক না থাকলে আল্লাহ তায়া’লার ভয়ংকর হুঁশিয়ারির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা কোরআনের কিছু অংশকে কি গ্রহণ করেছো আর কিছু অংশকে ছেড়ে দিয়েছো, তাহলে তোমাদের জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।’’
তিনি কোরআন জানা ও না মানার কারণে বিশ্বে অশান্তি বিরাজ করছে উল্লেখ করে বলেন, ‘যারা আজকে বেশি বেশি মানবতাবাদের কথা বলে, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি মানবতা লঙ্ঘন করছে। এর জন্য শুধু তারাই দায়ী নয়, মুসলমানরাও দায়ী। কারণ মুসলমানরা তাদের কাছে কোরআনের শিক্ষা পৌঁছাতে পারেনি। তিনি জোর দেন যে, কোরআন শুধু মুখস্থ করার বিষয় নয়, জীবন্ত কোরআনের বাণীকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভাষা সৈনিক ও কেমুসাস সভাপতি অধ্যক্ষ মাসউদ খান, সিলেট ইসলামী সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফজলুর রহমান, জাতীয় ইমাম সমিতির মহাসচিব মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ইউকে প্রবাসী হাফিজ শফিকুর রহমান মাদানি এবং ইকরা ইন্টারন্যাশনাল এর চেয়ারম্যান ইউকে’র নামকরা আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ।
কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদের খতিব হাফিজ মিফতাহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।