ঢাকা: নিজের অবস্থানে অনড় থাকতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ গোলাম পরওয়ার। তিনি ড. ইউনূসের উদ্দেশে বলেছেন, আপনি সোজা থাকুন।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সমস্ত ইসলামী দল, ব্যক্তি, সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আজ যে ঐক্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের আহ্বানে আজ এই ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে যারা বসে আছেন, তারাই হচ্ছেন এই ঐক্যের মহাকাণ্ডারী।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাকে বলতে চাই আপনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যেটা হয়েছে, তার চেয়ারম্যান। আপনি জাতির কাছে নিরপেক্ষ থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আপনার অঙ্গীকারের প্রতি আপনি সাবধান থাকবেন। আপনার কোনো কোনো ভূমিকায় জাতির মধ্যে কিন্তু সংশয় তৈরি হয়েছে।’
‘পরিষ্কার বলতে চাই, আপনি সোজা থাকবেন। আমরা আমাদের জন্য, কোনো দলের জন্য পক্ষপাতিত্ব চাই না। দুই হাজার ছাত্র-জনতার জীবন, হাজার হাজার মানুষের রক্ত আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। জাতির যে দাবি উচ্চকিত হয়েছে, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সেটা নিশ্চিত করতে হবে’— বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাতির উদ্দেশে ভাষণে একটা কথা বলবেন, সরকার প্রধান হিসেবে একটা কথা বলবেন, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটা কথা বলবেন, পরে একটা দলের সঙ্গে আলোচনায় গিয়ে সেই কথা ভুলে যাবেন, এতে নিরপেক্ষতা ভঙ্গ হয়েছে। আপনি সোজা থাকুন।’
‘রাজনৈতিক সংলাপে আপনি দোষ করেননি। বৈঠক করার অধিকার সবার আছে। কিন্ত, এক জায়গায় কথা বলে মত পরিবর্তন করবেন কেন? আপনাকে জাতির সামনে আসতে হবে, সব দলের সঙ্গে বসে আপনি বলবেন, আমাদের এই অসুবিধা, আসুন আমরা সবাই মিলে এইটা করি, আমরা রাজি আছি। কিন্তু, আপনার এই ভূমিকায় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আগামী ৮/১০ মাস পরে যদি নির্বাচন হয়, আপনি সোজা থাকবেন কিনা, সেটার প্রমাণ আপনাকে দিতে হবে’— বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশ থেকে, এই জনসমুদ্র থেকে এই বার্তা আপনাদের বুঝতে হবে, পিআর পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদের মানুষ নির্বাচন গ্রহণ করবে না।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘একটা দল বলছে, সরকার গঠনের পর সংস্কার। কীভাবে বুঝলেন আপনারা ক্ষমতায় যাবেন। জনগণের ভোট আগে পান, তারপর ক্ষমতায় যাবেন।’
ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ইমতিয়াজ আলম, শেখ ফজলুল করীম মাসউদ, হিন্দু মহাজোটের গোবিন্দ প্রামাণিক, বৌদ্ধ বিহারের বধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের দয়াল কুমার বড়ুয়া, খ্রিস্টান ঐক পরিষদের নির্মল রোজারিও প্রমুখ।