মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে গাজা সংঘাতে এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব।
শুক্রবার (২৭ জুন) কঙ্গো-রুয়ান্ডা চুক্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে ওভাল অফিসের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা এ জানান।
ট্রাম্প জানান, তিনি সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শত্রুতা বন্ধের চেষ্টা করছেন এমন কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন।
হামাস জানিয়েছিল, যুদ্ধ শেষ করার যেকোনো চুক্তির অধীনে তারা গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে ইচ্ছুক। অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না। হামাস অস্ত্র ত্যাগ করতে অস্বীকার করেছে।’
ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি এটি (যুদ্ধবিরতি) কাছাকাছি। আমি এইমাত্র সংশ্লিষ্ট কিছু লোকের সাথে কথা বলেছি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটি যুদ্ধবিরতি পাব।”
তিনি কার সঙ্গে কথা বলেছেন তা জানাননি, তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সময় তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন যোগাযোগে ছিলেন।
যুদ্ধরত পক্ষগুলো গুরুতর আলোচনা পুনরায় শুরু করতে বা তাদের দৃঢ় অবস্থান থেকে সরে আসতে প্রস্তুত এমন কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও ট্রাম্পের আসন্ন যুদ্ধবিরতি চুক্তির অপ্রত্যাশিত পূর্বাভাস এসেছে।
মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্যের বাইরে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের কিছুক্ষণ আগে উইটকফ সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সহযোগীদের একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি করতে সাহায্য করেছিলেন, কিন্তু সেই চুক্তি শিগগিরই ভেস্তে যায়।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার সোমবার (৩০ জুন) থেকে ওয়াশিংটন সফর করার পরিকল্পনা করছেন। তার এই সফরে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাজা, ইরান এবং নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য হোয়াইট হাউস সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
এর আগে নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বলেছেন, ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলাফল শান্তির জন্য সুযোগ তৈরি করেছে, যা তার দেশ নষ্ট করতে চায় না। এই বিজয় শান্তি চুক্তির একটি নাটকীয় সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা উৎসাহের সঙ্গে এটি নিয়ে কাজ করছি।
গাজার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল যখন হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই হামলায় একটি ভয়াবহ খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। গাজার সমগ্র জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
