ঢাকা: নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি গ্রহণ করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞার আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (২৯ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ প্রজ্ঞাপন আকারে একই বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়। এই বিধিমালা গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আদেশ দেন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ। এই আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ আট আইনজীবী মে মাসে আপিল বিভাগে আবেদন (রিভিউ) করেন।
আবেদনটি গত ২১ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুন শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
এর আগে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির বহুল আলোচিত গেজেট গ্রহণ করে আদেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগ। এরপর গেজেট প্রকাশের আগে এই বিধিমালায় আপত্তি জানিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা।
১৯৯৪ সালে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বেতন গ্রেড একধাপ নামিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তৎকালীন জেলা জজ ও জুডিশিয়াল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাসদার হোসেনসহ ২১৮ জন বিচারক। এরপর অনেক বিচারক সে রিটে পক্ষভুক্ত হন। এই রিট শুনানির পর ১৯৯৫ সালের ১৯ নভেম্বর অধস্তন আদালতের বিচারকদের বেতন গ্রেড নামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বিচারকদের বিসিএস ক্যাডারভুক্ত করার বৈধতার প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ৭ মে রুল যথাযথ ঘোষণা করে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস করার রায় দেন। তবে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আপিলের শুনানি শেষে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। ২০০৫ সালেও এই রায় বহাল রাখা হয়।
