Sunday 29 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে নারীরা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ জুন ২০২৫ ২২:৪৬ | আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ০০:২৭

বিশেষ আলোচনা সভা

ঢাকা: পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত শুধু প্রকৃতি বা অর্থনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়, এর গভীর প্রভাব পড়ছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। বিশেষত নারীরা এ সংকটের সবচেয়ে ভুক্তভোগী। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিপর্যয়: নারীর সংকট ও সংগ্রাম’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনায়, এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

রোববার (২৯ জুন) বিকেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পরিবেশবিদ, গবেষক, নারী অধিকারকর্মী এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

সংগঠনটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, পরিবেশ ও নারীর সংকট পরস্পর সম্পর্কিত। নারীদের পরিবেশ রক্ষার ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে পরিবেশ আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং মহিলা পরিষদের পরিবেশ উপপরিষদের সদস্য ড. নবনীতা ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে নারীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বরিশাল ও খুলনার মতো দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় নির্যাতনের হার বেশি, যেখানে পটুয়াখালীর আশ্রয়কেন্দ্রে নারীদের জন্য পৃথক টয়লেটের অভাবে যৌন সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘লবণাক্ত পানির কারণে খুলনা অঞ্চলে তালাক এবং বহুবিবাহের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য বৃক্ষরোপণ, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ এবং জৈব সার ব্যবহারের ওপর তিনি জোর দেন।’

বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, ‘নারী ও প্রকৃতি একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নারীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু জলবায়ু সংকট তাদের ওপর কাজের চাপ ও বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাম ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ‘নদীগুলো আজ প্রভাবশালীদের দখলে, যা নদীপারের নারীদের উচ্ছেদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় সঠিক উন্নয়ন দর্শন প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ গাছরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব বলেন, ‘গাছ কাটা ও পরিবেশ দূষণ রোধে সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।’

সভায় ইউনিসেফ, ডিসএবল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, গ্রীণ ফোর্সসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। তারা নারীদের পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় বক্তারা নারীর অধিকার রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণের সমন্বিত উদ্যোগকে জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

সারাবাংলা/এফএন/এসআর

জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশ ও জলবায়ু বিপর্যয় ভুক্তভোগী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর