ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই ধরনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন এবং মুসলিম বিশ্বের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে তেহরান জানিয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাঘাই এ কথা বলেন।
তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার (২৭ জুন) তার “অভ্যাসগত জঘন্য ভাষায়” ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে উদ্দেশ্য করে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি ইসরায়েলি শাসন এবং মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীকে আয়তুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করা থেকে বিরত রেখেছেন।
বাঘাই বলেন, ‘আমরা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছি, এমন নিচু স্তরের মন্তব্য সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যানযোগ্য এবং নিন্দনীয়। নেতার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্য লাখ লাখ ইরানি এবং মুসলিমের অনুভূতিতে আঘাত করা ছাড়া আর কোনো প্রভাব ফেলবে না।‘
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের বাগাড়ম্বর শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক রীতিনীতির মূলনীতি, যার মধ্যে জাতিসংঘের সনদে জাতিগুলোর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, সেগুলোরই লঙ্ঘন করে না; বরং এটি একটি “সম্মানিত সভ্যতার প্রতি অপমান” এবং “অঞ্চল ও বিশ্বের শত শত মিলিয়ন মুসলিমের” অনুভূতিতে আঘাত হানে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “নিঃসন্দেহে, ইরান এবং বিশ্বজুড়ে ইরানি ও মুসলিমদের কাছে শ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে অপমানজনক এবং ধমকপূর্ণ ভাষা প্রয়োগ কেবল আমেরিকার দূরদর্শী নীতিগুলির প্রতি বৈশ্বিক বিতৃষ্ণা বাড়াবে এবং সংলাপ ও অংশগ্রহণের দাবিকে আরও অবিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে।”
মন্ত্রণালয় মার্কিন কর্মকর্তাদের তাদের আপত্তিকর বাগাড়ম্বর এবং ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। পরিবর্তে, আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন করে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়ে জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, রোববার (২৯ জুন) রাতে গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজি একটি ফতোয়া জারি করেন। তিনি ঘোষণা করেন, যে কেউ ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হুমকি দেবে, সে আল্লাহর শত্রু হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ইসলামিক শিক্ষা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।