কক্সবাজার: র্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার মূলহোতা জায়েদ হোসেন ফারুককে (২২) আটক করেছে র্যাব-১৫। এ সময় তার কাছ থেকে র্যাবের পোশাক, জাল আইডি কার্ড, দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও হ্যান্ডকাফ জব্দ করা হয়।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে র্যাব-১৫ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
জায়েদ হোসেন ফারুক উখিয়া হলদিয়া পালং পশ্চিম মরিচ্যা (১ নম্বর ওয়ার্ড) এলাকার আব্দুর শুক্কুরের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক জানান, গত ১১ জুন বুধবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও এনায়েত উল্লাহর যোগসাজশে ৩ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে। এই তিন সন্ত্রাসী হলো র্যাব থেকে বরখাস্তকৃত সৈনিক সুমন মুন্সি, ফারুক ও শিকদার। তারা হাফিজ উল্লাহকে তার নিজের ঘর থেকে রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে অজ্ঞাত স্থান থেকে পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এই ঘটনার পর অপরাধীদের ধরতে র্যাবের একটি দল মাঠে নামে। গত ১৩ জুন রঙ্গিখালী ডাকাত শাহ আলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। এর পরদিন মরিচ্যা বাজার থেকে র্যাব থেকে বরখাস্তকৃত সৈনিক মো. সুমন মুন্সিকে আটক করা হয়।
আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন এবং বন বিভাগের প্রায় আড়াই শতাধিক সদস্য নিয়ে গহীন অরণ্যে টানা ৭২ ঘণ্টা যৌথ অভিযান চালিয়ে অপহৃত হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করে। প্রথম ধাপের এই অভিযানে ১টি দেশীয় অস্ত্র, ৩ রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
পরে ২৭ জুন শুক্রবার অপহরণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ডাকাত শিকদারকে মরিচ্যা থেকে গ্রেফতার করা হয়। শিকদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার বাড়ি থেকে অপহরণের মূল হোতা জায়েদ হোসেন ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। ফারুকের কাছ থেকে র্যাবের ৪টি পোশাক, ১টি জাল আইডি কার্ড, ১টি হ্যান্ডকাফ, ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি দেশি অস্ত্র, ১০ রাউন্ড তাজা গুলি, ১১ রাউন্ড কার্টিজ এবং ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, আটক বরখাস্তকৃত সৈনিক সুমন মুন্সি র্যাবে চাকরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কয়েক বছর আগে ঢাকার মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট থেকে র্যাবের পোশাক তৈরি করিয়েছিল।
র্যাব জানিয়েছে, মো. হাফিজুল্লাহ অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ সন্ত্রাসীকে আটক করা সম্ভব হলেও, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও ডাকাত শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।