Tuesday 01 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলা: গায়ের জোরে অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ জুলাই ২০২৫ ১৯:৫২ | আপডেট: ১ জুলাই ২০২৫ ২০:০৫

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন।

ঢাকা: পদ্মাসেতু প্রকল্পে অনিয়মের যথেষ্ট উপাদান বা প্রমাণ থাকার পরও গায়ের জোরে অভিযুক্তদের মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এমনটিই দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পদ্মাসেতুর পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি নিয়ে মামলা হয়। কিন্তু মামলার উপাদান যথাযথ থাকা সত্ত্বেও ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু (এফআরটি) জমা দিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দুদকের দায়িত্ব নেয়ার পর মামলাটি আবারও বিবেচনায় আনা হয়। অনেকটা গায়ের জোরে মামলাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল বলে আমাদের মনে হয়। তাই পুনরুজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসঙ্গে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

আব্দুল মোমেন বলেন, সরকারি ক্রয়বিধি অনুযায়ী পিপিএ এবং পিপিআর অনুসরণ করে কাজ করার কথা থাকলেও প্রকল্পে তা মানা হয়নি। মূল্যায়ন কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে একাধিকবার পরিবর্তন করেছে। একই জিনিস বারবার কেনা হয়েছে বলেও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া কনসালট্যান্টদের সিভি মূল্যায়ন যথাযথ করা হয়নি। মূল্যায়ন কার্যক্রমের বাধ্যতামূলক সাক্ষাৎ ও তথ্য যাচাই করা হয়নি। এতে স্পষ্ট অনিয়ম দেখা গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের প্রথম দফায় আসামি করা হয়েছিল, তাদের তো ডাকা হবেই। তবে তদন্তে যদি নতুন কেউ যুক্ত হয় বা গাফিলতির প্রমাণ মেলে, তাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন একটি নির্দিষ্ট পরিসরের স্বাধীনতা ভোগ করে। সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার হলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এ মামলায় এফআরটি দেওয়া ঠিক হয়নি বা সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ধারণা করা হচ্ছে। এখন নতুন তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।

২০১২ সালে দুর্নীতির আশঙ্কায় পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। এরপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ। মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলেন- তৎকালীন সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক ও এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোস্তফা, এসএনসি লাভালিনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহ এবং কেভিন ওয়ালেস।

মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসেন।

সারাবাংলা/আরএম/এনজে

অভিযুক্তদের দায়মুক্তি পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলা