Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি প্রকল্পের আত্মসাৎ হওয়া ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার, গ্রেফতার ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২ জুলাই ২০২৫ ১১:১৯

গ্রেফতার ২ অপরাধী।

নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে জাল সই করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসের কার্য সহকারী আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে সরকারি প্রকল্পের আত্মসাৎ হওয়া ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অফিসের কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং পিয়ন (আউটসোর্সিং) আশিক ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে তাদের গ্রেফতার ও টাকা জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. ফারজানা ইয়াছমিন।

এর আগে, গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও ব্যাংক ম্যানেজারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নেতৃত্বে কার্য সহকারী আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে নগদ ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন (পিআইও) অফিস ও এনএসআই সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প টিআর /কাবিখা’র প্রকল্প থেকে ভূয়া বিল ভাওচার ও পিআইও’র সই জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয় ওই অফিসের কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং তার সহকারী অফিস পিওন আশিক। এরই মধ্যে গত ১৫ জুন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিআর/কাবিখা প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেয়। কিন্তু বাজেট না থাকায় ৮১ টি বিল (বাউন্স হয়) ফেরত আসে।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় জুড়ে তুমুল হৈচৈ পড়ে যায়। পরে গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নিয়ে গোপন অনুসন্ধান শুরু করেন। ওই সময় ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পিআইও অফিসের দুইজন কর্মচারী সংশ্লিষ্টতার প্রমান পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাত ৩টার দিকে পিআইও অফিসের কার্য সহকারী তুহিনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে তার আলমিরাতে থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয। এসময় ওই টাকার উৎসের সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় সে। পরে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ নগদ টাকা সহ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক তুহিন ও আশিক সই জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা শিকার করেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে, অফিস কার্য সহকারী (প্রজেক্ট) পদে কর্মরত আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং আউটসোর্সিং পিয়ন আশিক দীর্ঘদিন ধরেই জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে জড়িত ছিলেন। তদন্তে ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ, জাল সইযুক্ত বিল এবং পিয়ন আশিকের স্বীকারোক্তি মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিশ্চিত হয়।

শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেওয়া হলে ৮১বিল বাউন্স হয়। তারা জানায় ৮১টি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। এমন তথ্য জানানোর পর অমরা তাদের কাছে থেকে পরিশোধকৃত বিল ভাওচার নেই। সেগুলোতে সই জালের বিষয়টি ধরা পরে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে এনএসআই তদন্ত করে তুহিন ও আশিকের সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে তুহিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফতাফ হোসেন বলেন, ‘আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে তুহিন ও আশিক সই জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা শিকার করেন। আমরা নগদ টাকা সহ গ্রেফতারদের আদালতে শোপর্দের ব্যবস্থা নিচ্ছি। যে পরবর্তীতে তদন্ত দুদক।’

শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. ফারজানা ইয়াছমিন বলেন, ‘গ্রেফতার তুহিন ও আশিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমরা সেটাই করেছি।’

সারাবাংলা/এসডব্লিউ

সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ