চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের পর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুরের অপসারণ দাবিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। থানার সামনে অবস্থান নেওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের একাংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (২ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাদের ঘোষিত ‘পটিয়া ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরও দেখা গেছে।
বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা ‘ওসি তুই স্বৈরাচার- এ মুহুর্তে পটিয়া ছাড়, দালালি না রাজপথ- রাজপথ রাজপথ, ইনকিলাব ইনকিলাব – জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ – এমন আরও বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
সমবেতদের উদ্দেশে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে পালাতে সক্ষম হলেও তার অনেক স্বৈরাচার এখনও রয়ে গেছে। পটিয়া থানার ওসি স্বৈরাচারের দোসর। তার নেতৃত্বে আমাদের ছাত্র ভাইদের হামলা করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এই ওসিকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আমরা থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত (মঙ্গলবার) রাতে একটা ঘটনা ঘটেছে। এটা নিয়ে কিছু নেতাকর্মী পটিয়া থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সেখানে সতর্ক আছেন। তাদের আলোচনায় আসার জন্য বলা হয়েছে। আশা করি, অপ্রীতিকর কিছু হবে না, শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।’
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে ‘ছাত্রলীগ নেতা’ উল্লেখ করে এক যুবককে মারধর করতে করতে থানায় ঢোকার সময় পুলিশ বাধা দেয়, এতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবি, রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দীপঙ্কর তালুকদারকে আটক করে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অতর্কিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা শুরু করে। এতে তাদের কয়েকজন আহত নেতাকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
পুলিশের ‘হামলার’ প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে ‘পটিয়া ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এক যুবককে ছাত্রলীগের নেতা উল্লেখ করে মারধর করতে করতে থানা চত্বরে নিয়ে যান। কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের বক্তব্য, ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই।
এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা আটক যুবককে নিয়ে থানার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর পুলিশের সঙ্গে তাদের ধ্বস্তাধস্তি ও হাতাহাতি শুরু হয়। পুলিশ নেতাকর্মীদের থানা থেকে বের করে দেয়।