Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশেরও কম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩১ | আপডেট: ২ জুলাই ২০২৫ ১৫:০৭

ঢাকা: দেশে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। চলতি বছরের মে শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ কম। মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। অন্যদিকে আগের বছর (২০২৪ সাল) একই সময়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত কয়েক মাস ধরেই বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নগতি অব্যাহত রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির সময় গত ২০২৪ সালের জুলাই শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। এরপর গত আগস্টে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২ শতাংশ, অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ, নভেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ডিসেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, জানুয়ারিতে ছিল ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং এপ্রিলে ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাঠামোগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী দেশের ব্যাংক খাত। খেলাপি ঋণ বাড়ছে, ঋণ বিতরণ কমে যাচ্ছে ও পুঁজির ঘাটতি-  নতুন ঋণ প্রদানে বড় বাধা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মুদ্রানীতির কড়াকড়ি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, তারল্য ঘাটতি, সরকারের অতিরিক্ত ঋণনির্ভরতা ও ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসের অভাব- সব মিলিয়ে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের উৎপাদন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান খাত আরও চাপে পড়তে পারে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নীতি সুদ হার বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারে ঊর্ধ্বগতির কারণেও বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

তারা বলছেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আগে যেখানে ঋণের সুদের হার ছিল ১০ শতাংশের নিচে, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ। সুদের হারের এ ঊর্ধ্বগতি ব্যবসায়িক ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, এর ফলে মুনাফা কমছে ও ঝুঁকি বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত এমন একটি সুষম নীতি গ্রহণ করা, যেখানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধির গতিও বজায় রাখা সম্ভব হয়। পাশাপাশি বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে আমদানি বিশেষত ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি বাড়াতে হবে, যাতে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগে যেতে পারেন। এতে বাজারে তারল্য বাড়বে এবং ব্যাংকগুলোর ডিপোজিটও বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং নিষ্পত্তির পরিমাণ ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়েছে।

তবে আলোচ্য সময়ে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ খাতে এলসি খোলায় ও নিষ্পত্তিতে এই সময়ের মধ্যে যথাক্রমে ২৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমেছে।

সারাবাংলা/আরএস

বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতে ঋণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর