Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ জুলাই ২০২৫ ১৮:৫৭ | আপডেট: ২ জুলাই ২০২৫ ১৯:০২

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। ফাইল ছবি

ঢাকা: জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে তিনি এ বিবৃতি দেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান দেশের প্রচলিত কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ও নেতৃত্বে হয় নাই। এমনকি অনেক দল এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রকাশ্যে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ছাত্রদের শুরু করা একটি আন্দোলন যেখানে গণমানুষ সম্পৃক্ত হয়েছে এবং একটা পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সম্পৃক্ত হয়েছে। এই আন্দোলন বিগত পনের বছর ধরে চলা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন ছিল না। বরং জুলাই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জেঁকে বসা অনিয়মকে দূর করা, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া এবং দেশ থেকে চিরতরে স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘যে তরুণরা অকাতরে জীবন দিয়েছে, তাদের অধিকাংশই প্রচলিত রাজনীতি করত না। কারণ, তারা প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে অপছন্দ করত। তাদের আত্মত্যাগ প্রচলিত রাজনৈতি সংস্কৃতির বিরুদ্ধেও একটি বিক্ষোভ ছিল।’

সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘আজ জুলাই অভ্যুত্থানের একবছর পূর্তির এই ক্ষণে দাঁড়িয়ে বেদনা ও দায় অনুভব করছি। জুলাই ঘোষণা এখনো দেওয়া যায় নাই, রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক জায়গায় একমত হওয়া যায় নাই, বিচার নিশ্চিত করা যায় নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাকেন্দ্রিকতা প্রকট হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি এখনো চলমান। চাঁদার দাবিতে রাতভর নির্যাতন করা, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করার মতো বর্বরতা এখনো বিদ্যমান। অথচ নির্বাচন নির্বাচন করে সংস্কার ও বিচারের দাবিকে আড়াল করে দেওয়া হয়েছে। যে চাওয়া নিয়ে আমাদের তরুণরা গত জুলাইয়ে প্রাণ দিয়েছে এক বছর পরে এসে মনে হচ্ছে তাদের চাওয়া হতে আমরা অনেক দূরে অবস্থান করছি।’

তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার যে উদ্দীপনা ও প্রতিজ্ঞা নিয়ে কাজ শুরু করেছিল এখন তাতে ভাটা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে লন্ডন বৈঠকের পরে সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। তারা একমত না হলে সেই প্রস্তাব আর অগ্রসর হচ্ছে না। পিআরের মতো একটি বিষয় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও কেবল একটা দলের জন্য বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। অথচ স্বৈরতন্ত্র রোধে পিআর একটি পরীক্ষিত ও উত্তম পদ্ধতি।’

সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে তার প্রতিজ্ঞা ও দায় পূরণে অবিচল ও কঠোর হতে হবে। স্বৈরতন্ত্রের রাস্তা খোলা রেখে কারও চাপে যদি এই সরকার নির্বাচন আয়োজন করে তাহলে ইতিহাসে তারা চির অপরাধী হয়ে থাকবে। কারণ জুলাই রাষ্ট্র সংস্কারের যে মহাসুযোগ তৈরি করেছে তা জাতীর জীবনে পুনরাবৃত্তি হবে এমন আশা করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। স্বৈরতন্ত্র প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে সক্রিয় হতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি সুষ্ঠু ও সুন্দর হতে হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠাগুলোকে শক্তিশালী হতে হবে। এর পরে নির্বাচন নিয়ে কথা বলা যাবে। রাষ্ট্রকে ভঙ্গুর করে কোনো দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য যেনতেন নির্বাচন আয়োজন করা হলে তার পরিণতি ভালো হবে না।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

চেতনা বাস্তবায়ন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর জুলাই বিপ্লবের এক বছর রাজনৈতিক সংস্কৃতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর