ঢাকা: সীমিত মানিচেঞ্জার সেবা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানি চেঞ্জার বিষয়ক বিজ্ঞপ্তিসহ বৈদেশিক মুদ্রার দৈনিক বিনিময় হার উল্লেখপূর্বক গ্রাহকদের সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এরূপ স্থানে বাংলা ও ইংরেজিতে স্পষ্টাক্ষরে লিখিত নোটিশবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
সীমিত মানিচেঞ্জার সেবা পরিচালনার জন্য দেশের তফসিলি ব্যাংকের শাখা, ব্যাংক বুথ, হোটেল, গিফট শপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য জারিকৃত নতুন নীতিমালায় এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (০২ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘সীমিত মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানসমূহের লাইসেন্স প্রাপ্তি, কার্যক্রম পরিচালনা ও নবায়নের সংক্রান্ত নীতিমালা’ জারি করা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পরিপালনে ব্যর্থ হলে কিংবা ‘বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭’-এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক জারিকৃত নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হলে কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত হলে কোনো কারণ দর্শন ছাড়াই প্রদত্ত লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
‘সীমিত বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন পরিচালনার লাইসেন্স প্রদান বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক সংরক্ষণ করে’- উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদনকারী ব্যাংক শাখা/বুথ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলকে সার্বিক সহযোগিতা পূর্বক বৈদেশিক মুদ্রায় লেদেনের তথ্য ও প্রমাণিক দলিলাদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের লক্ষ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে দেশের প্রচলিত আইন, বিধিমালা এবং সময়ে সময়ে ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ (বিএফআইইউ) কর্তৃক জারিকৃত সকল সার্কুলার ও নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
নতুন নীতিমালায় সীমিত মানিচেঞ্জার লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদনপত্র দাখিলের পদ্ধতি, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যপরিধি, লাইসেন্সের মেয়াদকাল ও নবায়নের পদ্ধতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান/প্রত্যাখ্যান ও পরিদর্শনের ক্ষমতা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়, অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকসমূহ সীমিত মানিচেঞ্জারের সনদ ইস্যুর ক্ষেত্রে যোগ্যতা, কার্যপরিধি, নবায়ন প্রক্রিয়া ও দায়বদ্ধতার শর্ত যথাযথভাবে মেনে চলবে। সনদের জন্য এডি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আবেদন করতে হবে।
অনুমোদিত ব্যাংক শাখা বা বুথের জন্য বৈদেশিক লেনদেন সংশ্লিষ্ট কাজে প্রশিক্ষিত জনবল, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দাখিলের শর্ত রাখা হয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন), ব্যবসা নিবন্ধন সনদসহ প্রয়োজনীয় দলিলপত্র দাখিল করতে হবে।
নবায়নের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত কোম্পানির জন্য রেজিস্ট্রেশন সনদ, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন, বিগত বছরের আর্থিক বিবরণী এবং মালিকানা বা ভাড়াকৃত স্থানের দলিলপত্রের কপি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক অনাপত্তি পাওয়ার পর ৫০ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) ফি পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, অনুমোদিত ব্যাংক শাখা বা বুথের সনদ হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং এই লাইসেন্সের আওতায় বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়, বিদেশগামীদের পাসপোর্টে ডলার এন্ডোর্সমেন্ট, এনক্যাশমেন্টসহ অনুমোদিত লেনদেন পরিচালনা করা যাবে।
লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। গৃহীত বৈদেশিক মুদ্রা অবশ্যই পরবর্তী কর্মদিবসে স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর করতে হবে, তবে লেনদেনের সুবিধার্থে সর্বোচ্চ ১ হাজার মার্কিন ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করা যাবে।