ঢাকা: আগামী বছরও কাতারে আম মেলা হবে বলে জানিয়েছেন কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম।মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে কাতারের রাজধানী দোহার বাণিজ্য এলাকাখ্যাত সুক ওয়াকিফে অনুষ্ঠিত সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশি ম্যাংগো ফেস্টিভ্যালের সমপানী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কাতারের বিভিন্ন প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) দুই সদস্যকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী।
ওই অনুষ্ঠানে সম্মাননা পেয়েছেন সারাবাংলা ডটনেট’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট এমদাদুল হক তুহিন। প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে কাতারে আম রফতানিতে অবদান রাখায় তুহিনকে এই সম্মাননা দিয়েছে কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। সম্মাননা তুলে দেন কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম। সম্মাননা হিসাবে সাংবাদিক এমদাদুল হক তুহিনকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে সম্মাননা পেয়েছেন পলিটিক্সনিউজ২৪.কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক। এই দুই সাংবাদিক বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) পক্ষ থেকে মেলায় অংশ নেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশার চেয়েও ভালো সাড়া পেয়েছি। এই মেলা আয়োজনে সার্বিক সহায়তা করায় সুক ওয়াকিফ কর্তৃপক্ষ ও কাতার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ। বাংলাদেশ থেকে আম রফতানিকারক যারা এসেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ। কমিউনিটি ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতাও ছিলো অসাধারণ। সবার আন্তরিক সহযোগীতায় আম মেলা সফল হয়েছে। আগামী বছরও আম মেলা হবে ইনশাআল্লাহ।’
কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, অনুষ্ঠানে কাতারের ৫ জনকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। সম্মাননা হিসাবে তাদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মধ্যে রয়েছে সুক ওয়াকিফ কর্তৃপক্ষ, কাতার সরকারের মালিকানাধীন সুক ওয়াকিফ ভ্যানুতেই বিভিন্ন দেশের মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, বাংলদেশী আম উৎসবও একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে কাতারের প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসকে সম্মাননা দেওয়া হয়ছে, যারা মেলা আয়োজনে সার্বিক সহায়তা করেছে। প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের জেনারেল সালেহ আল হিদি এবং প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা খালিদ আল সোয়াইদি ও জাহের আল মোল্লাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন :
- কাতারের আম মেলায় সম্মাননা পেলেন সারাবাংলার তুহিন
- বাংলাদেশি আমের ঘ্রাণে মেতেছে কাতার
- একদিন আগেই শেষ কাতারের আম উৎসব, বিক্রি ৭৩ টন
এ প্রসঙ্গে কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আসা মেলাতে অংশগ্রহণকারী ১৮ টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মানান সার্টিফিকেট দিয়েছি। দোহা থেকে অংশগ্রহণকারী আরও ২২টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য মোট ৪০টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এছাড়া মেলায় সার্বিকভাবে যারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন তাদেরকেও সম্মাননা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।’
আব্দুল্লাহ আল রাজী বলেন, ‘মেলাটি সফল ও সার্থক করায় সম্মাননা প্রাপ্তদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের মেলা আয়োজনে সার্বিক সহায়তা ও অংশগ্রহণ করতে তারা যেন ভবিষ্যতেও উৎসাহিত হন সেকারণেই এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আমরা একই স্থানে পরবর্তী বছরেও মেলা করতে চাই। আমরা চাই এখানে বাংলাদেশের আমের চাহিদার ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। এই মেলার নানামূখী প্রচারের কারণে কাতারের সবার মুখে, শুধুমাত্র বাংলাদেশী নয়, অন্যান্য দেশের বাসিন্দারাও এখানে এসেছিলেন। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য, কাতারে ভবিষ্যতে যেন এ ধরণের মেলা হয়, তারা যেন আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে সেই অনুপ্রেরণা দিতেই এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রথমবারের মতো কাতারে অনুষ্ঠিত হয়েছে সপ্তাহব্যাপী আম উৎসব। কাতার ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করে। গেল ২৫ জুন শুরু হওয়া এই মেলা ১ জুলাই পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও আমের সংকটে একদিন আগেই ৩০ জুন মেলার সমাপ্তি ঘটে। তবে পূর্বে নির্ধারিত সমাপনীর দিনেই অর্থাৎ ১ জুলাই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই মেলায় প্রায় ৭৩ টন আম বিক্রি হয়েছে।