ঢাকা: ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমার সীমা নির্ধারণ এবং হাইকোর্টের বিভাগীয় সম্প্রসারণ—এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় একমত হয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো।’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এই ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একমত হয়েছি যে সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় থাকবে। তবে হাইকোর্টকে ডিসেন্ট্রালাইজ করে বিভাগীয় শহরগুলোতে স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
তাহের বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীদের কষ্ট লাঘবে ও ন্যায়বিচার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হলে এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। তবে বিচারপতি ও পেশাদার আইনজীবীর পর্যাপ্ততা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।’
জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে, বিচারপতি ও আইনজীবীর সংখ্যা বাড়াতে বাজেট বাড়ানো ও দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহের বলেন, ‘কক্সবাজারেই শতাধিক আইনজীবী রয়েছেন যাদের কেউ কেউ সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন। সুতরাং মেধার অভাব নেই, সুযোগ তৈরি করলে এলাকাতেই দক্ষ জনবল পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তারদের মতো যদি আইনজীবীরাও দেখেন এলাকার কোর্টেই কাজের সুযোগ রয়েছে, তাহলে তারা রাজি হবেন।’
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, অপরাধীকে সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকবে। তাহের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সরাসরি কাউকে ক্ষমা করতে পারবেন না। একটি সুপারিশ বডির পরামর্শক্রমে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতির ভিত্তিতে ক্ষমা ঘোষণা করা যাবে।’
এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অপরাধের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কারো বাবাকে খুনের দায়ে যদি কেউ দণ্ডিত হয়, সেখানে রাষ্ট্রপতি এককভাবে ক্ষমা করতে পারবেন না। ভুক্তভোগী পরিবারকে জানাতে হবে এবং তাদের সম্মতি ছাড়া ক্ষমা দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, যা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে—রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট বা আন্তর্জাতিক অপরাধে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষেত্র থাকলেও, ব্যক্তিগত অপরাধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সম্মতি অপরিহার্য।’
এ সময় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও ড. হামিদুর রহমান আযাদ উপস্থিত ছিলেন।