Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেসরকারি কোম্পানিকে সুবিধা দিতে সরকারি স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ!


১ জুলাই ২০১৮ ২২:০৮

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই গত এক বছর ধরে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটি স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রেখে উৎকোচের বিনিময়ে বেসরকারি স্যালাইন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা চাঙ্গা করার সুযোগ করে দিয়েছে।

রোববার (১ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এই তথ্য বের হয়ে এসেছে। দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য সারাবাংলা’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী সারাবাংলা’কে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হলেও কেউই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। অবিলম্বে এ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতার পূর্ণ সদ্ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’

মুনীর চৌধুরী বলেন, কোনো যৌক্তিক কারণ ও ভিত্তি ছাড়া উৎপাদন বন্ধ রাখাও এক ধরনের দুর্নীতি। অনুসন্ধানে এ দুর্নীতি প্রমাণিত হলে দুদকের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গোচরেও আনা হবে।

দুদক সূত্র জানায়, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে আসা এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আকস্মিক অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের উপ-পরিচালক সাহিদুর রহমান। তার সাথে ছিলেন পাঁচ জন পুলিশ সদস্য।

এদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা দুদকের সরেজমিন অভিযানে হাসপাতালটিতে ভয়াবহ অনিয়মের সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় দুদকের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিতে পরিকল্পিতভাবে গত এক বছর ধরে স্যালাইন উৎপাদন প্রায় বন্ধ রাখা হয়েছে। উৎকোচের বিনিময়ে বেসরকারি স্যালাইন উৎপাদনকারীদের সুবিধা দিতে প্রতিষ্ঠানটিতে কাঁচামাল কেনা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গত এক বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে স্যালাইন উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

দুদক জানায়, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ড. আবুল কালাম মোহাম্মদ আজাদ স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে নেন। কাঁচামাল কিনতে না পারায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি। আবুল কালাম আজাদ আরো জানান, গত অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ পাওয়া আট কোটি টাকা কাঁচামাল না কিনে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ রেখে বেসরকারি স্যালাইন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতারণা করায় প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর