কষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ছাত্রীদের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানি, আপত্তিকর আচরণ এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক সই করা পৃথক দুটি অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানি, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অশ্লীল আচরণ, ক্লাসরুমে পোশাক ও শারীরিক গঠন নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং হোয়াটসঅ্যাপ/মেসেঞ্জার/ইমোর মাধ্যমে ভিডিও কলে আপত্তিকর কথাবার্তার অভিযোগ এনেছে। এই সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে, ৫ জুলাই থেকে তাকে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি বিধি মোতাবেক জীবন ধারণ ভাতা পাবেন।
ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করার জন্য উপাচার্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটিকে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
চার সদস্যের এই কমিটিতে ফিকহ অ্যান্ড ‘ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ নাজিমুদ্দিনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার আরিফা আক্তার ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাকসুদা আক্তার।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ইমোতে ভিডিও কল দেওয়া, যৌন হয়রানি, কটূক্তি, বাজে ইঙ্গিত, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, কল না ধরলে নম্বর কম দেওয়া, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও ফ্রি-মিক্সিং বোঝানো, নেকাব নিয়ে কটাক্ষ, ব্যক্তিগত রুমে ডাকা এবং বডি শেমিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল। গত ২২ জুন বিভাগের অন্তত ডজনখানেক ছাত্রী এই সকল অভিযোগ উল্লেখ করে বিভাগীয় সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে গত ২ জুলাই তারা উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান এবং তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করেন।