পঞ্চগড়: পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার টমেটো চাষী ও ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) টমেটো আমদানি স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। তাদের দাবি, ভারতীয় টমেটো আমদানির কারণে স্থানীয় টমেটোর দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন চাকলাহাটের টমেটো ব্যবসায়ী রাসেল আলী, দেবীগঞ্জের ভাউলাগঞ্জের হাসিবুল আলম রিজু, সদরের হাড়িভাসার আহমদ দুলু, চাকলাহাটের রিয়াজুল ইসলাম ও গোলাম হোসেনসহ প্রমুখ।
বক্তারা জানান, মৌসুমের শেষ দিকে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে অধিক দামে কাঁচা টমেটো কিনেছেন। বাজারে ভালো দামও ছিল। কিন্তু ভারত থেকে এলসি টমেটো আসার পর থেকে স্থানীয় টমেটোর দাম অনেক কমে গেছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের টমেটো বিক্রি করতে পারছেন না। যার কারণে কৃষকদের কাছ থেকে বাকিতে কেনা টমেটোর দাম এবং শ্রমিকদের মজুরিও পরিশোধ করতে পারছেন না।
তারা জোর দাবি জানান, মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ভারত থেকে এলসির টমেটো আমদানি বন্ধ করা হলে পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার উৎপাদিত টমেটো বিক্রি শেষ হয়ে যাবে। অন্যথায়, ব্যবসায়ী ও টমেটো চাষীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
সদর উপজেলার চাকলাহাটের ব্যবসায়ী রাসেল আলী তার ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরে বলেন, ‘মৌসুম শেষ হওয়ায় আমরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণ টমেটো ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে কিনেছিলাম। এই টমেটো পাকিয়ে প্রতি ক্রেট (২৫ কেজি) ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছিলাম। কিন্তু ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে টমেটো আসার পর থেকে প্রতি ক্রেট টমেটোর দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় নেমে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতে করে আমার একারই প্রায় ২৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। আমি এখন চাষীদের ও শ্রমিকদের টাকা দিতে পারছি না। টাকা দিতে না পারায় তারা আমাকে বেইজ্জত করছে। ভারত থেকে টমেটো আসা বন্ধ না হলে ঋণ অথবা বাড়ির জমি বিক্রি করে আমাকে তাদের পাওনা পরিশোধ করতে হবে।’
এই পরিস্থিতি স্থানীয় টমেটো চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করেছে এবং তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।