Sunday 06 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপির সংস্কার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ জুলাই ২০২৫ ১৩:১৮ | আপডেট: ৬ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩১

বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বিএনপির সংস্কার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিএনপির সংস্কার নিয়ে সংশয়ের মিথ্যা বার্তা দিচ্ছে কয়েকটি মহল।

রোববার (৬ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব এ কথা বলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রত্যাশা যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি বেশ কিছু প্রস্তাব নিয়ে হতাশা ও উৎকণ্ঠার কথাও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সংস্কারের নামে জনগণের নির্বাচিত সরকার ও সংসদকে দুর্বল করার কোনো প্রস্তাব বিএনপি মেনে নেবে না।”

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ছয়টি সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমে বিএনপি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে এবং ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বহু জায়গায় ছাড় দিয়েছে। তবে কিছু কিছু কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত না হয়ে বিএনপি ‘গঠনমূলক ভিন্নমত’ জানিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশনের বিষয়ে এখনও পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হয়নি, তবে র‌্যাব বিলুপ্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে বলে জেনেছেন।

তিনি বলেন, দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৭টি সুপারিশের মধ্যে ৪৬টিতে বিএনপি সম্মত হয়েছে, কেবল ২৯ নম্বর সুপারিশে আদালতের অনুমতি ছাড়া তদন্তের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কারে ২০৮টির মধ্যে ১৮৭টি সুপারিশে একমত, ৫টিতে আংশিক এবং ১১টিতে অসম্মতি জানিয়েছে দলটি, যার মধ্যে প্রদেশ সৃষ্টি ও পদোন্নতির বিষয় রয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ”বেশ কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য নয় এবং কিছু প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।”

তিনি বলেন, বিএনপি সংবিধান সংস্কারের ১৩১টি সুপারিশের বেশিরভাগে একমত হয়েছে। আলোচিত ৭০ অনুচ্ছেদ ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের বিষয়েও ঐকমত্যের স্বার্থে ছাড় দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ বিরোধী দলকে দেওয়া, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সংক্রান্ত ৪৯ অনুচ্ছেদের পরিবর্তন—এসব ক্ষেত্রেও বিএনপি সম্মত হয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া রাষ্ট্র কাঠামোয় বড় কোনো পরিবর্তনের অধিকার কোনো ব্যক্তি, দল বা কমিশনের নেই। “যেসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন কঠিন, তাদের বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে বিএনপি যুক্তিগ্রাহ্য মতামত দিয়েছে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সংবিধানের সংশোধন, ন্যায়পাল আইন, সীমানা বিন্যাস ও বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠায় বিএনপির সম্মতি রয়েছে। তবে ১৯৮৮ সালে উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী এ বিষয়ে সতর্কতার পরামর্শ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, “দীর্ঘ দেড় দশকের আন্দোলন-সংগ্রাম, গুম-খুনের শিকার সহকর্মীদের আত্মত্যাগ ও লাখো নেতাকর্মীর দুঃখ-শোকের ভেতর দিয়ে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থেকে আজ আরও শক্তিশালী হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যেন শহিদের রক্ত ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনে ব্যর্থ না হই।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “নির্বাচিত সরকারকে অকার্যকর করা মানে রাষ্ট্রকে দুর্বল করা। আর এটা কোনো সংস্কার নয়, বরং নতুন ফ্যাসিবাদের পথ প্রশস্ত করা।”

সারাবাংলা/এফএন/ইআ

জরুরি সংবাদ সম্মেলন বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর