ঢাকা: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শোক ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তাজিয়া মিছিল করছেন শিয়া মুসলিমরা। রোববার (৬ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বের হয় তাজিয়া মিছিল।
মিছিলে প্রতীকীভাবে তুলে ধরছেন কারবালার প্রান্তের বিয়োগান্ত দৃশ্য, ইয়াজিদের বর্বরতা, মুসলিমের ওপর জুলুমের চিত্র। শোকের মাতনের সঙ্গে ধ্বনিতে তুলে ধরছেন প্রতিবাদ। কারবালার প্রান্তরের বিয়োগান্ত দৃশ্য, কোথাও ইয়াজিদের বাহিনীর বর্বরতা, কোথাও ইমাম হোসেনের শাহাদাতের মুহূর্ত।
আজ সকাল ৯টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ থেকে মিছিলটি বের হয়ে ফার্মগেটে শেষ হয়। ইমাম হোসেনের কারবালার প্রান্তরে শাহাদাতের স্মরণে আয়োজিত এই মিছিলে অংশ নেয় শিশু, কিশোর, নারী ও পুরুষ সব বয়সী শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।
মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হয়। ‘হায় হোসেন’ ধ্বনিতে মুখর ছিল পুরো এলাকা। অনেকে ইমাম হোসেনের স্মরণে বুক চাপড়ে শোক প্রকাশ করেন। জানান দেন এই একাত্মতা জালিমদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া দুপুরেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থনে তাজিয়া মিছিল করতে দেখা গেছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কালো পোশাক পরে শোক প্রকাশ করছেন।
তাজিয়া মিছিলে অংশ নেওয়া শিয়া সম্প্রদায়ের সবার বিশ্বাস, ইমাম হোসেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নত না করে জীবন উৎসর্গ করে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়ে গেছেন। আশুরা সেই ত্যাগের প্রতীক। তাই সব মুসলিমদের ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রত্যাশা করেন তারা।
মিছিলে অংশ নেওয়া এক অংশগ্রহণকারী বলেন, কারবালার এই দিনটি আমাদের কাছে শুধু শোক নয়, প্রতিবাদের প্রতীক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শিক্ষা।
আরেকজন বলেন, এটা আমাদের বিশ্বাসের অংশ। আমরা চাই সবাই শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করুক, বিভেদ নয়- হোক ঐক্য।
এদিকে, মিছিলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরা। ব্যবহার করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন।
উল্লেখ্য, আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য শোকাবহ দিন। হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম কারবালার প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) শাহাদাত বরণ করেন। সেই ঘটনা স্মরণে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা প্রতিবছর আশুরার দিন তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে থাকেন।
রাজধানী ছাড়াও বিভিন্ন শহরে বের হয়েছে তাজিয়া মিছিল, আয়োজিত হয়েছে দোয়া, মিলাদ ও নফল রোজার আয়োজন।