Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ মাস অকেজো মিটফোর্ড মর্গের ফ্রিজ, লাশ সংরক্ষণ চলছে বরফে


২ জুলাই ২০১৮ ০৯:৫৯

।। সৈয়দ সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে (মিটফোর্ড) হাসপাতালের লাশ সংরক্ষণের জন্য রয়েছে একটি মাত্র ফ্রিজ। সেটিও দুই মাস ধরে নষ্ট। ফলে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে লাশ সংরক্ষণ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে সনাতন পদ্ধতি। ফ্রিজের কাজ বরফ দিয়ে চালানো হচ্ছে।

রোববার (১ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গের কাছেই স্বজনদের লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন বেশ কয়েকজন। সারাবাংলাকে তাদের একজন সাঈদ আহমেদ জানালেন, গেন্ডারিয়া থেকে এসেছেন তিনি। বোনের ছেলে আসিফ কাজির লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন। আসিফ গত বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হন। গতকাল কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। গতকালই স্বজনরা খবর পেয়ে মর্গে সনাক্ত করেন আসিফের মৃতদেহ। কিন্তু মর্গে ময়না তদন্তের সময় শেষ হওয়ায় মৃতদেহ রেখেই বাসায় চলে যেতে হয়।

সাঈদ রহমান অভিযোগ করে বলেন, ’শুনেছি মর্গের ফ্রিজ অনেক দিন যাবৎ নষ্ট হয়ে পরে আছে। তাই আসিফের জন্য মর্গের লোকদের ১৫০০ টাকা দেই বরফ দিয়ে লাশটা রাখতে। একটি মাত্র ফ্রিজ। তাও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

হতাশ কণ্ঠে সাঈদ বলেন, ‘এগুলো লিখে আর কি করবেন। কোন কাজ তো হয় না।’

মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে শ্যামল নামে একজন কাজ করেন আউট সোর্সিংয়ে। তিনি বলেন, ’মর্গে ফ্রিজ একটাই। ড্রয়ার আছে ১২টা। কোন কোন দিন অনেক লাশ মর্গে আসে। কষ্ট করে ফ্রিজে রাখতাম। কিন্তু গত দুই মাস যাবৎ ফ্রিজটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে তিনটি লাশ আছে মর্গে। এদের তিনটিই প্রায় পঁচে গেছে। কাজ করতে প্রচুর কষ্ট হয়। মাঝে মাঝে আঞ্জুমান তাড়াতাড়ি মৃতদেহগুলো নিয়ে যায়। দেরি করলেই সমস্যা হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, প্রতিদিন এই মর্গে  দক্ষিণ ও মডেল কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জসহ রাজধানীর আটটি থানার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়। প্রতিদিন গড়ে লাশ আসে গড়ে দুই থেকে তিনটি। অকেজো ফ্রিজটিতে লাশ রাখা যেত ১২ টির মতো।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের (মিটফোর্ড) ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ বলেন, ’ইতোমধ্যে আমরা কলেজের অধ্যক্ষ কে বিষয়টি অবহিত করেছি। এবং ৮/১০ বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখোন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। এমনিতেই মর্গটা খুবই ছোট। এর মধ্যে সামনে পচা লাশ রেখে কাজ করতে হয়।’

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিল্লাল আলম বলেন, ‘ফরেনসিক থেকে আমরা অনেকবার চিঠি পেয়েছি। ফ্রিজের কম্প্রেসার নষ্ট হয়েছে। সারতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা দরকার ছিল। এই মাসেই ঠিক হয়ে যাবে আশা করি।’

মর্গের পাশেই পানি শোধানাগারের কাজ চলছে। মর্গ এখানে থাকবে কিনা সেটা নিয়েও সংশয় ছিল। সে কারণে আরও দেরি হয়েছে বলেও জানান ডা. বিল্লাল।

সারাবাংলা/এসএসআর/এসএমএন/এমএইচ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর