নীলফামারী: নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় স্কুলের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কে ছাত্রদল নেতা আশরাফুল আলম আশরাফ নিজেকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার’ দাবি করেছেন। রোববার (৬ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ দাবি জানান এবং এ ঘটনায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আশরাফ ডোমার উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব এবং পাঙ্গা মহেশ চন্দ্র লালা উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি
তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমি প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দিয়েছেন। আগামী ৮ ও ৯ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য অভিভাবক সমাবেশকে ঘিরে নানা প্রস্তুতি চলছিল, যার অংশ হিসেবে ১৪টি নতুন ফ্যান কেনা হয়েছে এবং সেগুলোর স্থাপন কাজও চলমান।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বিদ্যালয় চত্বরে একটি সুসজ্জিত বাগান গড়ে তোলা। সেই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জাতের ২০টি গাছ কিনে আনা হয় এবং আমি নিজে উপস্থিত থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের সহায়তায় গাছগুলো রোপণ করি।’
গাছ কাটার প্রসঙ্গে আশরাফ লিখেছেন, ‘স্কুলের সামনে একটি মৃত ও জীর্ণ গাছ ছিল যা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। অভিভাবক সমাবেশকে সামনে রেখে স্কুল বন্ধের দিনে ছাত্রদের পরামর্শে আমরা নিজেরাই গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নেন। পূর্বে একজন মিস্ত্রিকে গাছ কাটার দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেদিন তিনি ব্যস্ত থাকায় আমরা নিজেরাই কাজটি করেন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘প্রধান শিক্ষকের পরামর্শে গাছটি কেটে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এই অর্থ শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের জন্য ব্যবহার করার কথা থাকলেও তারা তা নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং পরবর্তীতে নতুন গাছ কেনার প্রস্তাব দেয়।’
এই ঘটনাকে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করে আশরাফ বলেন, ‘এলাকার কিছু মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি বাড়িয়ে তুলে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এ বিষয়ে ডোমার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা আশরাফুল বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি। রাজনৈতিকভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তাকে আটকে রেখে অনেকে অপপ্রচার চালিয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্কুল প্রাঙ্গণেই বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর সামসুদ্দিন (লিটন) এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, তারা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সমাধান করেছে।