গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৮২ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, কাতারে যুদ্ধবিরতি আলোচনা ফের শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইসরায়েলের সঙ্গে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি এই সপ্তাহে হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু খুব শিগগিরই ওয়াশিংটনে যাবেন।
রোববার (৬ জুলাই) গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকায় ইসরায়েলি হামলার পর বেঁচে ফেরা লোকজন ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, সেখানকার দৃশ্য ছিল “প্রলয়ের মতো”—নিহতদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হচ্ছিল, আর ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছিল।
মাহমুদ আল-শেখ সালামা, যিনি গাজা শহরের এক হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছেন, জানান, শনিবার রাত ২টার দিকে (জিএমটি ২৩:০০) যখন তিনি ঘুমাচ্ছিলেন, তখন ওই হামলা হয়।
তিনি বলেন,”আমরা একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেলাম এবং কিছুক্ষণ পরেই আরেকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেলাম। পরে আমরা ছুটে যাই আর তখন ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকা পড়েছিল যার মধ্যে রয়েছে চারটি পরিবার, বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি এবং প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টার পরে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুজনকে জীবিত বের করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা দুজনকে জীবিত বের করে এনেছি – বাকিরা শহিদ হয়েছেন এবং এখনও আটকা পড়ে আছেন।”
গাজা থেকে রিপোর্ট করা আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেছেন, ‘দুই ঘণ্টার ব্যবধানে আমরা গাজা উপত্যকা জুড়ে কমপক্ষে সাতটি বিমান হামলা গণনা করেছি।’
দেইর এল-বালাহের উত্তরাঞ্চলে একটি স্থানীয় কমিউনিটি রান্নাঘরেও হামলা চালানো হয় এবং এর মূল পরিচালকসহ তিনজন নিহত হন বলেও জানান তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক পরিসংখ্যানে জানায়, উপত্যকায় ইসরাইলি ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ত্রাণ উদ্যোগ গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) কেন্দ্রগুলো থেকে খাবার সংগ্রহ করার সময় কমপক্ষে ৭৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪ হাজার ৮৯১ জন।
ট্রাম্প প্রশাসন গত জুনের শেষ দিকে জিএইচএফকে ৩০ মিলিয়ন ডলার সরাসরি অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে অভিযোগ আছে, ইসরাইলি বাহিনী জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোর আশপাশের স্থানে খাবারের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে প্রতিনিয়ত হামলা চালাচ্ছে।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা থাকলেও মার্কিন প্রশাসনের দাবি, জিএইচএফ একমাত্র সংগঠন যারা গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ করতে পেরেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এদিন ইসরাইলের ১২০০ মানুষকে হত্যা করে প্রায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।