যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (৬ জুলাই) সতর্ক করে বলেছেন, যেসব দেশ ব্রিকস জোটের ‘অ্যান্টি-আমেরিকান’ নীতিতে সমর্থন দিচ্ছে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে। ট্রাম্প জানান, সোমবার (৮ জুলাই) থেকে বিশ্বের বহু দেশের কাছে শুল্ক-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো শুরু হবে।
ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ট্রাম্প লেখেন, ‘ব্রিকস-এর অ্যান্টি-আমেরিকান নীতিতে যে কোনো দেশের সমর্থনের জবাবে কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।’
ব্রিকস একটি অর্থনৈতিক জোট, যার প্রাথমিক সদস্য দেশগুলো হলো: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সম্প্রতি জোটটি ইরান, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইথিওপিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়া বেলারুশ, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মতো আরও দশটি দেশ সহযোগী সদস্য। সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দিয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বর্তমানে ব্রাজিল ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজন করছে। সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো ‘একতরফা শুল্ক ও অশুল্ক ব্যবস্থার বিস্তার’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যা অনেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির প্রতি ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে বুধবার (৯ জুলাই)। ট্রাম্প জানিয়েছেন, সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিভিন্ন দেশের কাছে শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হবে। তিনি জানান, ‘আমরা ১২ থেকে ১৫টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছি এবং বাকি দেশগুলোতেও চিঠি পাঠানো হবে।’
চুক্তির সময়সীমা ৯ জুলাই পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রাম্প জানান, ‘৯ জুলাইয়ের মধ্যে বেশিরভাগ দেশ হয় চুক্তি করবে, নয়তো শুল্ক চিঠি পাবে।’
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির আওতায় এসেছে যুক্তরাজ্য (১০ শতাংশ), চীন (১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ) এবং ভিয়েতনাম (সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ)। যদিও ট্রাম্প দাবি করেছেন তিনি এরইমধ্যে ২০০টি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু বিস্তারিত দেননি।
ব্রিকস নিয়ে ট্রাম্পের হুমকি নতুন করে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে যখন ব্রিকস জোট নিজস্ব মুদ্রা গঠনের মতামত প্রকাশ করেছিল, ট্রাম্প তা প্রতিহত করতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদিও মুদ্রা গঠনের প্রস্তাব এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
ব্রিকস সম্প্রতি ইরানের ওপর সামরিক হামলা এবং পরমাণু স্থাপনায় হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, এসব বেসামরিক অবকাঠামোতে ইচ্ছাকৃত হামলা, যা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে। যদিও বিবৃতিতে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।