চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেছেন। এরপর সেনাসদস্যরা গিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এখন শ্রমিকরা সিইপিজেডের ভেতরে সড়ক ও বেপজা (বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি) কার্যালয়ের ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন।
দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখায় সিইপিজেডে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। ভেতরে থাকা পণবোঝাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে সিইপিজেডের দুই নম্বর সড়কের থিয়ানিস এ্যাপারেলস লিমিটেড নামে ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশ জানায়, প্রথমে কয়েক’শ শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নেন। সকাল ১০টা থেকে তারা সেখানে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর দেড়টার দিকে তারা সিইপিজেড থেকে বের হয়ে বিমানবন্দর অভিমুখী সড়কের উভয়পাশ অবরোধ করেন।
এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করে বিকেল ৪টার দিকে আবার সিইপিজেডের ভেতরে নিয়ে যান। এরপর তারা বেপজা কার্যালয়ের মূল ফটক ও সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।
থিয়ানিস অ্যাপারেলসের স্যাম্পল মেকার মো. জাহিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ৩০ জুন বেপজা কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দেয়। এসময় আমাদের বলা হয়েছিল মে ও জুন মাসের বেতন আমাদের জুলাইয়ের দুই তারিখ পরিশোধ করা হবে। সেদিন এসে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষার পর বেপজা কর্মকর্তারা সাত তারিখ আসতে বলেন। আজ (সোমবার) সকালে এসে কারখানার সামনে দুই ঘন্টা বসেছিলাম। কিন্তু কারখানা কিংবা বেপজার কেউ আমাদের সাথে এসে কথা বলেননি।
‘এরপর আমরা কারখানার সামনে সবাই অবস্থান নিয়ে প্রায় তিনঘন্টা বিক্ষোভ করি। তখনও কেউ আমাদের সাথে কথা বলতে আসেননি। তখন আমরা বের হয়ে মূল রাস্তা অবরোধ করেছিলাম। এরপর সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে আমাদের আশ্বাস দেন যে, বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উনারা কথা বলবেন। আমাদের ভেতরে যাবার অনুরোধ করেন উনারা। আমরা এখন বেপজা গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি।’
শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানিয়েছেন, থিয়ানিস অ্যাপারেলসের কাছে বেপজা কর্তৃপক্ষের পাওনা আছে ২৮ কোটি টাকা। বেতন না দেয়ায় বারবার সেখানে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় বেপজা কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বন্ধ করে দেন।
নগরীর ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আকতারুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধ থাকা কারখানাটির শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে দেড় ঘণ্টার মতো মূল সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। আমরা গিয়ে বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে একটি সমাধানে আসার আশ্বাস দিয়েছি। এরপর তারা সড়ক ছেড়ে আবার সিইপিজেডের ভেতরে গেছেন।’
এর আগে, গত ৮ মে থিয়ানিস অ্যাপারেলসের শ্রমিকরা তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সিইপিজেডের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। এরপর বেপজা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে তাদের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর আবার মে ও জুন মাসের বেতন বকেয়া রেখে দেয় প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ।