Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচন দেরি হলে— বিনিয়োগ কমে যাবে, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে: ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৭ জুলাই ২০২৫ ১৮:১২ | আপডেট: ৭ জুলাই ২০২৫ ১৮:১৭

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সিলেট: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কোনো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না। নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে। এর ফলে বিনিয়োগ কমে যাবে। বিচারিক ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। এ কারণে জনগণের নির্বাচিত সরকার দরকার।

সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে সিলেট নগরের পাঠানটুলায় সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকের আমন্ত্রণে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সময় ঠিক করেছেন, এই জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।’

বিজ্ঞাপন

ফখরুল বলেন, ‘হঠাৎ করে হাসিনা এমনি এমনি পালিয়ে যাননি। বহু মানুষের সংগ্রাম, রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে মানুষ কথা বলতে পারবে, বাকস্বাধীনতা থাকবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে, তরুণরা কাজের সুযোগ পাবে এবং মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবে। সেই দেশ গড়ার জন্য তারা নতুন করে লড়াই শুরু করেছেন এবং এই সংগ্রামের নেতা হচ্ছেন তারেক রহমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো অসুস্থ অবস্থায় আমাদের পরমার্শ দিয়ে যাচ্ছেন ‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেই দল— যে দল স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, কর্মস্থান সৃষ্টি করতে চাই এবং বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র করতে চাই। সেজন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। শহীদ জিয়াউর রহমান যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই দেশ আমরা গড়তে চাই।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কেউ যাতে আঙ্গুল তুলে না বলতে পারে আমরা জমি দখল করেছি, চাঁদাবাজি করেছি, জায়গা দখল করেছি। জয় আমাদের সুনিশ্চিত, ইনশাআল্লাহ।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, একদল লোক নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে, নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। আমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি, ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি। ১৭ বছরের আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন ঘটেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি জনগনকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন আদায় করে ছাড়বে। বাংলাদেশের জনগন গত ১৭ বছর যেভাবে আন্দোলন করেছে, প্রয়োজনে ভোটের অধিকারের জন্য আবার আমরা আন্দোলন নামবো।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমরা হাসিনা মুক্ত হয়েছি কিন্তু ষড়যন্ত্র মুক্ত হইনি। বিএনপির বিরুদ্ধ সবাই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। একটি দল যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারা একেক দিন একেক কথা বলছে। কখনো বলছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়, কখনো বলছে ভোটের পরিস্থিতি হয়নি, কখনো বলছে নির্বাচন হলে অসুবিধা নাই, কখন কি বলে ঠিক নেই। তবে এটা বুঝা যায় যে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে প্রতিরোধ বা থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ ছাড়া কারও নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন— মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল। এ দেশে আওয়ামী লীগ হচ্ছে অন্যায়-অনাচারের দল। বাকশাল কায়েম করে তারা দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল।’

সভাপতির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ মালিক বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ও শাসনের অবসান ঘটাতে প্রবাসে বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্ভীকভাবে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন। তারা বিদেশের মাটিতে থেকেও ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জাগিয়ে রেখেছিলেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, হাবিবুর রহমান, তাহসিনা রূশদী লুনা, ডা. এনামুল হক চৌধুরী, মুহিদুর রহমান, ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ সিদ্দিকী, বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য নিপুন রায়, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাদীয়া চৌধুরী মুন্নী ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।

স্বাগত বক্তব্যে রাখেন— জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন— মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী।

সারাবাংলা/এসআর

বিএনপি মির্জা ফখরুল সিলেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর