চট্টগ্রাম ব্যুরো: সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের শুরু থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাঙ্গনে বিক্ষোভ-অস্থিরতা শুরু হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই মূলত ক্যাম্পাসে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। সেই আন্দোলন চট্টগ্রাম নগরীতে পৌঁছে ৭ জুলাই। সেদিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীতে আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে।
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির আগেরদিনও অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীতে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিলেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধও করা হয়। তবে নগরীতে আন্দোলন জোরদারে ভূমিকা রেখেছিল ৭ জুলাইয়ের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে ৬ জুলাই রাতে ঢাকার শাহবাগ থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পরদিন ৭ জুলাই দুপুর আড়াইটার শাটল ট্রেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা পৌঁছেন নগরীতে।

চট্টগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। ছবি: সারাবাংলা
বিকেল ৪টার দিকে প্রথমে নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে মিছিলের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীদের রেলস্টেশনের মূল ফটকেই আটকে দিয়েছিল পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া’ স্লোগান দেন। কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কির পর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে দুই নম্বর গেট এলাকায় যান। শিক্ষার্থীরা সেখানে কোটাবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থা নিয়ে তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর দুই নম্বর গেট থেকে মিছিল নিয়ে লালখান বাজার এলাকায় গিয়ে সন্ধ্যায় সেদিনের মতো কর্মসূচি শেষ করেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। সেই কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন কলেজসহ আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল প্রথমবারের মতো।
সেই ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির মধ্য দিয়েই চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকা কোটাবিরোধী থেকে বৈষম্যবিরোধী এবং একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনের মূল ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।