ঢাকা: ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সংখ্যায় পরিবর্তন আনা হবে’- বলে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, অন্তত ৫০ শতাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি একই পরিবারের সদস্য সংখ্যা কমতে পারে।
সোমবার (৭ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিস্ক বেজড সুপারভিশন-আরবিএস বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পর্যায়ক্রমে এ নতুন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে।
গভর্নর বলেন, বর্তমানে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২৩ অনুযায়ী, এক পরিবারের তিনজন পর্যন্ত পরিচালক থাকতে পারেন। নতুন সংশোধনীতে পর্ষদ সদস্য সংখ্যা আরও কমানোর প্রস্তাব রয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্যানেল গঠন করবে। যেখান থেকে নির্বাচন করতে হবে। প্যানেলের বাইরে থেকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করতে চাইলে তার যথেষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। তার যোগ্যতা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দেবে। এক্ষেত্রে পরিচালক নিয়োগে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং ব্যাংকিং জ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে কিছু ব্যাংকে পরীক্ষামূলকভাবে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি চালু করা হয়েছে এবং তা ইতিবাচক ফল দিয়েছে। তাই আসছে জুলাই থেকে ধাপে ধাপে সব তফসিলি ব্যাংকে এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এই নতুন তদারকি কাঠামোর আওতায় প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক, বাজার, পরিচালনাগত, আইনগত এবং কৌশলগত ঝুঁকি আরও সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। সেই ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও দ্রুত নেওয়া যাবে। এতে প্রতিটি ব্যাংকের কার্যক্রম আলাদাভাবে মূল্যায়ন এবং ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোয় দ্রুত হস্তক্ষেপ করা সহজ হবে।
নতুন কাঠামো বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সংগঠনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। নতুনভাবে গঠন করা হবে একাধিক তদারকি বিভাগ, যেমন-তদারকি নীতিমালা ও সমন্বয় বিভাগ, তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ব্যাংকিং তদারকি বিভাগ এবং অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধবিষয়ক ঝুঁকি তদারকি বিভাগ। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য থাকবে পৃথক তদারকি দল।