ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর এ সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে বাংলাদেশের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। মার্কিন প্রশাসন বিশেষত বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে এই কদিনে।
সেই আলোচনার বিভিন্ন পর্বে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নেন। ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। আগামীকাল বুধবার (৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের ভাষ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রস্তাবিত শুল্ক চুক্তিতে অনেক শর্ত যুক্ত। বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা বিবেচনায় যেসব শর্ত মানা সম্ভব তাতে ওয়াশিংটনের সায় মিললেই চুক্তিতে উপনীত হবে দুই দেশ। প্রয়োজনে কিছুটা ছাড়ও দিতে রাজি বাংলাদেশ। ঐকমত্য না হওয়া পর্যন্ত নেগোসিয়েশন চলবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে আসছে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে। গত ৩রা এপ্রিল হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। শুল্কের হার কম-বেশি করে দেশটি একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় ৬০টি দেশের বিষয়ে। বাড়তি শুল্ক আরোপ কার্যকরের কথা ছিল গত ৯ই এপ্রিলে। তবে ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি শুল্ক হারের ঘোষণা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে। স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হবে আগামীকাল অর্থাৎ ৯ জুলাই।
উল্লেখ্য, তিন মাসের জন্য সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে এপ্রিলেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানো নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করছে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন- ঢাকা ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি শুল্কসংক্রান্ত চুক্তি করতে আগ্রহী: প্রেস সচিব
কাছাকাছি সময়ে মার্কিন বাণিজ্য দূত জেমিসন গ্রিয়ার বরাবর আলাদা চিঠি পাঠান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন। চিঠিতে রফতানির যে কোনো বাধা বা প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে ঢাকা সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী বলে জানানো হয়। অবশ্য চিঠি দুটি ওয়াশিংটনে পৌঁছার আগেই তিন মাসের স্থগিতাদেশ আসে। সেটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি অনুরোধ রয়েছে সমূহ ক্ষতির আশঙ্কায় থাকা দেশগুলোর।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর পাশাপাশি ভারত, ভিয়েতনাম, জাপান ইত্যাদি দেশ পালটা শুল্কের হার কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প