Tuesday 08 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদ্মার ভাঙন: জাজিরায় ২০ দোকানসহ ঘরবাড়ি বিলীন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৮ জুলাই ২০২৫ ২০:০৯

পদ্মার ভাঙন

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ডক ইয়ার্ড সংলগ্ন মাঝিরঘাট এলাকায় পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে অন্তত ২০টি দোকানপাট ও আশেপাশের বেশ কিছু ঘরবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনের তীব্রতায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ।

সোমবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট এলাকায় আকস্মিক নদীভাঙন শুরু হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙনে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সাগর মাদবর, শফিকুল ইসলাম ও আলী আহম্মদ।

বিজ্ঞাপন

নদীভাঙন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাদের দোকানপাট ও ঘরবাড়ি নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ তাদের কিছু দোকান অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে সক্ষম হলেও, অনেক স্থাপনা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ভাঙনের শিকার পরিবার ও ব্যবসায়ীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

এদিকে, ভাঙনকবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্রুত এই পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আরও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ হোসেন, জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় ও শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সরদার একেএম নাসির উদ্দীন কালু এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর শাখার আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির তাদের দলীয় লোকজন নিয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বাঁধের বেশ কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। অনেক দোকানপাট ও বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা করে তাদের সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান জানিয়েছেন, ‘পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে তাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলা অব্যাহত থাকবে।’

শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, ‘ভাঙনকবলিত ৩০টি পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। যাদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে টিন ও আর্থিক সাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

ভাঙন প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক জানান, ‘ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ইতোমধ্যে দেড়শ’ জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও ৪শ’ ব্যাগ প্রস্তুত আছে, যা ফেলা হবে এবং আরও প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে।’

সারাবাংলা/এসআর

দোকান বিলীন নদী ভাঙন পদ্মার ভাঙন শরীয়তপুর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর