ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজার সমগ্র জনগোষ্ঠীকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
সোমবার (৯ জুলাই) সাংবাদিকদের তিনি জানান, রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপের ওপর একটি ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলা হবে, যেখানে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে রাখা হবে এবং শেষপর্যন্ত পুরো ২১ লাখ জনসংখ্যাকেই সেখানে স্থানান্তর করা হবে।
কাটজ জানান, এই ক্যাম্পে প্রবেশের আগে প্রত্যেককে নিরাপত্তা যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তারা হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তবে যাদের প্রবেশ করানো হবে, তাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি থাকবে না।
তিনি বলেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ৬০ দিনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির মধ্যে পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে এই নির্মাণ কাজ শুরু করা হতে পারে।
এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলি মানবাধিকার আইনজীবী মাইকেল স্ফার্দ। তিনি জানান, ‘এটি একটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা। এটি গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তে জনসংখ্যা স্থানান্তরের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের পূর্বপ্রস্তুতি।’
জাতিসংঘ এরইমধ্যে সতর্ক করে বলেছে, দখলকৃত ভূখণ্ডের বেসামরিক জনসংখ্যাকে জোরপূর্বক স্থানান্তর বা বহিষ্কার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং এটি জাতিগত নির্মূলের সমতুল্য।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বা হামাস থেকে এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে সোমবার (৭ জুলাই) হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রশংসা করেন, যাতে বলা হয়েছিল যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এবং গাজার জনগণকে স্থায়ীভাবে অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত দূরদর্শী। এটি একটি স্বাধীন পছন্দের ধারণা। কেউ যদি থেকে যেতে চায়, থাকুক। কিন্তু কেউ চলে যেতে চাইলে, যেন যেতে পারে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি এমন দেশগুলোর খোঁজে, যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ভালো ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চায়।’
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৯ লাখ, এবং জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে আরও ৩৪ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু রয়েছেন।