ঢাকা: অডিট-একাউন্টিং পেশায় জড়িতদের স্বচ্ছতা ও সততা বড় বিষয়- বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে অডিটিং ও একাউন্টিং বড় বিষয়। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এ দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে।
আর যারা এসব কাজে জড়িত তাদের স্বচ্ছতা ও সততা সবার আগে বড় বিষয়। অনেক প্রতিষ্ঠান পেপার সাবমিট করেন যার বেশিরভাগই মানসম্পন্ন নয়।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অডিট অ্যান্ড একাউন্টিং সামিট-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফআরসির চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ হোসেন ভুঁইয়া।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এনবিআরের ক্ষেত্রে অডিট করাটা খুবই জরুরি। এনবিআরের মতে, প্রতি ১০০ জনে ৭০ জনই শূন্য ট্যাক্স দেয়, এটা অবিশ্বাসযোগ্য। যারা ৭০ ভাগ তথ্য দিচ্ছে, তাদের হিসাব খতিয়ে দেখা উচিত। আবার ১৮ লাখ রিটার্ন জমা পড়ছে সে তথ্যেও গরমিল থাকতে পারে। যারা অডিট করে তাদের অন্তর দৃষ্টি দিয়ে অডিট কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।
আর্থিক খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার নিয়ে অনেক বাধা বিপত্তি আছে। অনেকেই মনে করেন যে, আর্থিক খাতের সংস্কার বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রস্তাবেই হচ্ছে, বাস্তবে এমনটা না। সরকারের নিজস্ব উদ্যোগেও সংস্কার হচ্ছে। তবে তারা ভালো পরামর্শ দিলে আমরা কেনো তা নেবো না।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে গরমিল পাওয়া যায়। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক বেজড সুপারভিশন) পুরোপুরি কার্যকর হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বিশ্বাস অর্জন করতে গেলে অডিট রিপোর্টে স্বচ্ছতা ও সঠিক তথ্য দিয়ে রিপোর্ট সাবমিট করতে হবে। এটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে কাজ করবে। পাওনা নিয়ে চার সরকারি প্রতিষ্ঠানে অডিট করতে গেলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি। যদি একাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড কোন প্রতিষ্ঠান অনুসরণ না করে, তাহলে তাদের ওপর শাস্তি আরোপ করা উচিত।
অডিটরদের সৎ থাকার পরামর্শ দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, বর্তমানে আমি যদি অডিট রিপোর্ট দিয়ে বিচার করি, তাহলে স্বচ্ছ অডিটর পাওয়া যাবে না। আইএফআইসি ব্যাংকে প্রচুর কেলেঙ্কারি হয়েছে। সালমান এফ রহমান অডিট রিপোর্টের সহায়তায় একটা পেপার কোম্পানির ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তথ্য দেখিয়ে অর্থ নিয়েছেন। গত শাসনামলে ব্যাংক খাতের একের পর এক আর্থিক অনিয়ম হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে নি। এসব অডিট রিপোর্ট লুকানোয় শীর্ষ অডিট ফার্মকে চিহ্নিত করা হয়েছে- এটা প্রশংসার দাবিদার তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।