Wednesday 09 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোনো দলই পাচ্ছে না ‘শাপলা’
এনসিপির ক্ষোভ, অভিযোগ নেই নাগরিক ঐক্যের

নাজনীন লাকী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ জুলাই ২০২৫ ২৩:০৯ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ০০:৩১

‘শাপলা’ প্রতীক না পাওয়ায় এনসিপির ক্ষোভ, অভিযোগ নেই নাগরিক ঐক্যের। কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে কোনো রাজনৈতিক দলকেই ‘শাপলা’ না দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে কমিশনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’। আর শাপলা প্রতীক কোনো রাজনৈতিক দলকেই না দেওয়ার সিদ্ধান্তে ইসির প্রতি ক্ষোভ বা অভিযোগ জানায়নি ‘নাগরিক ঐক্য’।

বুধবার (৯ জুলাই) রাতে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ গণমাধ্যমকে জানান, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালাতে শাপলাকে তফসিলভুক্ত না করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

সম্প্রতি নাগরিক ঐক্য দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘কেটলি’র পরিবর্তে ‘শাপলা’ দাবি করেছে। একইসঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ চেয়ে নিবন্ধন আবেদন করে। সেই থেকে শুরু ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় দলের জন্য নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে তা বরাদ্দ নিয়ে বিতর্কের। আজ সেই বিতর্কের সমাধান দিল ইসি।

বিজ্ঞাপন

ইসির এই সিদ্ধান্তের পর সারাবাংলার সঙ্গে কথা হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারীর। তিনি বলেন, “নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে যদি ‘কাঁঠাল’, ‘বাঘ’ বা ‘ধান’ থাকতে পারে, তাহলে শাপলা কেন থাকতে পারবে না। নির্বাচন কমিশনের শাপলা প্রতীক হিসেবে না রাখার যে যুক্তি দিয়েছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি নির্বাচন কমিশন একটি দলের হয়ে কাজ করছে। তারা এই সিদ্ধান্তের মদদ দিয়ে সেটাই আবার প্রমাণ করলেন। এই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।’ কমিশনের পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই কমিশনের অধীনে এনসিপি নির্বাচনে যাবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসে গেছে।’ এই ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে আগামীতে পলিটিক্যাল সব পর্যায়ে লড়াইয়ের কথাও জানান এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক।

এদিকে দলীয় প্রতীক ‘শাপলা’ দাবি করে কমিশনের সঙ্গে দুই দুইবার বৈঠক করা রাজনৈতিক দল ‘নাগরিক ঐক্য’ এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ বা অভিযোগ কোনো কিছুই জানায়নি। দলটির দফতর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ সারাবাংলাকে জানান, যেহেতু জাতীয় প্রতীক ‘শাপলা’ ইসির অন্তর্ভুক্ত থাকছে না, তাই এ বিষয়ে তাদের আর কোনো ক্ষোভ বা অভিযোগ নেই।

তিনি বলেন, “আমরা প্রথমে কমিশনে প্রতীক ইস্যুতে বৈঠক করেছি। পরে যখন দেখি আরেকটি দল ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে কাজ করছে, তখন আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করি। সেই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের আশস্ত করেছিলেন, নিয়ম-বিধি অনুযায়ী কাজ করবে ইসি।”

তিনি আরও বলেন, “যেহেতু ইসি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনো দলকেই ‘শাপলা’ প্রতীক দিচ্ছে না তাই আমাদের কোনো কিছু বলার নাই। তবে যদি প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে আমাদের না দিয়ে অন্য আরেকটি দলকে প্রতীকটি দেওয়া হতো তাহলে আমরা এই বিষয়ে নানা কর্মসূচি দিতাম। যেহেতু ইসি কোনো দলকেই দিচ্ছে না, তাই এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই।’

সেইসঙ্গে মহিদুজ্জামান মহিদ জানান, নিবন্ধনে তারা প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ ও ‘দোয়েল’ চেয়েছিল। যদি জাতীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ ও ‘দোয়েল’ কোনোটাই না হয় তাহলে আবারও দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আজ নির্বাচন কমিশনের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ না রাখার এই সিদ্ধান্তে যে বিতর্ক ছিল তার কী সমাধান হলো? নাকি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হলো- সেটাই এখন দেখার বিষয়।

উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার সংসদ নির্বাচনের জন্য আগের ৬৯টি প্রতীক থেকে বাড়িয়ে অন্তত ১১৫টি প্রতীক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য বরাদ্দ করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রতীক তালিকার তফসিল সংশোধন করে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে তা পাঠানো হবে শিগগির।

সারাবাংলা/এনএল/পিটিএম

অভিযোগ এনসিপি ক্ষোভ নাগরিক ঐক্য নির্বাচন কমিশন শাপলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর