ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফা শুল্ক আলোচনার প্রথম দিন শেষ হয়েছে। আলোচনায় বেশিরভাগ ইস্যুতেই উভয় পক্ষ একমত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় এক ফেসবুক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা জানান, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রথম দিন শেষ হয়েছে। কাল (বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই), পরশুও (শুক্রবার ১১ জুলাই) আলোচনা চলবে। যুক্তি-তর্কে অধিকাংশ বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হয়েছে। তবে এখনই শুল্ক ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।’
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে— আলোচনা অত্যন্ত বিস্তৃত ছিল, যেখানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে।
উভয় পক্ষ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় তাদের বৈঠক আবারও শুরু করবে। শুক্রবারও আলোচনা চলবে।
বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। ঢাকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত হন।
সকালেই ঢাকা থেকে ওয়াশিংটন পৌঁছে সরাসরি বৈঠকে অংশ নেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনার প্রথম বৈঠকে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা হয়—যা বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে মিটিং শুরুর আগে ওয়াশিংটন থেকে বুধবার হোয়াটসঅ্যাপে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘সচেতনভাবেই সার্বিক ইস্যুটি আমাদের পর্যালোচনায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় শুধুমাত্র শুল্ক ইস্যু নয়, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বিষয়েও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে দেশের জন্য যেটা বেস্ট হবে, সে বিষয়গুলো নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে।’
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে ভালোকিছু পাওয়া যাবে বলেই আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গেল ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। ট্রাম্পের এই চিঠির পরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসলো ঢাকা ও ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে চুক্তির কিছু ডকুমেন্টও পাঠানো হয়েছে, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। সেখানে সামরিক সরঞ্জাম, এলএনজি, গম, কৃষিপণ্য, তুলা, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি সহজীকরণের কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বাইরে প্রস্তাবিত চুক্তির এনেক্সার ডকুমেন্ট দিয়েছে দেশটি।