সিলেট: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকে নেমে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সেপটিক ট্যাংকের গ্যাসের বিষক্রিয়ায় এই মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে চিকিৎসক।
নিহতরা হলেন— রানা নায়ক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)। এরা সবাই শ্রীমঙ্গল হরিণছড়া চা বাগানের চা শ্রমিকের সন্তান।
এ ঘটনায় রবি বুনার্জী (২০) নামে অপর একজনকে আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফিনলে কোম্পানির আওতাধীন হরিণছড়া চা বাগানে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নিহত রানা নায়কের মোবাইলটি সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গেলে তা উদ্ধার করতে তিনি প্রথমে ট্যাংকে নামেন। পরে একে একে তিনজন সহকর্মী শ্রাবণ, কৃষ্ণ ও নিপেন তাকে সাহায্য করতে ট্যাংকে নামেন। কিন্তু বিষাক্ত গ্যাসে তারা সবাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের উদ্ধারে এগিয়ে যান রবি বুনার্জী নামের আরও একজন তরুণ। সেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সব্যসাচী পাল তমাল বলেন, যে চারজনকে রাতে আমাদের কাছে নিয়ে এসেছিল তারা সবাই মৃত ছিলেন। পরে রবি বুনার্জী নামে একজনকে নিয়ে আসে তাকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি।
তিনি আরও বলেন, “এক রিংয়ের সেপটিক ট্যাংকে এত বিষাক্ত গ্যাস কীভাবে তৈরি হলো, তা আশ্চর্যজনক। ময়নাতদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে।”
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, “এটি একটি হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। আমাদের তরুণ প্রজন্মের চারজন অকালে চলে গেল। সেপটিক ট্যাংকের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকলে হয়তো এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”
চার তরুণের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, বুধবার (৯ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে শ্রীমঙ্গলের হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে চারজন তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন। খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে।