Thursday 10 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রগতিশীল শিক্ষক পরিচয়ে মব নিয়ে বিবৃতি দিলেন ঢাবি নীল দলের শিক্ষকরা

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২৫ ১৫:২১

ঢাকা: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক’ ব্যানারে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের শিক্ষকসহ ৭১ জন শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিবৃতিদাতাদের একাধিক শিক্ষক নিশ্চিত করে জানান, একদল প্রগতিশীল শিক্ষকদের উদ্যোগে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

নীল দলের পক্ষে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিবৃতিদাতারা জানান, ‘প্রগতিশীল শিক্ষক’দের উদ্যোগে এ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

তবে এদের মধ্যে এক শিক্ষক দাবি করেছেন, এ বিবৃতির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, ‘মব ও মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি কোথাও কোনো বিবৃতি দিইনি এবং কোনো সইও করিনি।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিদাতা শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই নিজ নিজ বিভাগে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বয়কট হয়েছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে এক শিক্ষক বলেন,”নীল দলের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই।”

বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মবসন্ত্রাসের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এতে শুধু মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার পাশাপাশি কেউ কেউ গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, নারীরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, এমনকি শিশুদের ভবিষ্যৎও বিপর্যস্ত হয়েছে। মুক্তবুদ্ধি চর্চার সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের এসব ঘটনায় তারা ‘খুবই উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত’ বলে জানান।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আইন-আদালত, গণমাধ্যম, ব্যবসাকেন্দ্র, আবাসিক ভবন, ঐতিহাসিক স্থাপনা, এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠান পর্যন্ত মবসন্ত্রাসের কালো থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এ সংক্রান্ত খবর দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।

তারা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। বরং, কোনো কোনো দায়িত্বশীল মহল ‘মব’কে ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করায় মবসন্ত্রাস একটি সাংস্কৃতিক রূপ নিচ্ছে। এতে মবসন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।”

বিবৃতিদাতারা জানান, “কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমেই তার বিচার হওয়া উচিত। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে দেশকে ‘মবের মুল্লুক’ বানানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তারা রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আইনের সঠিক প্রয়োগ, সামাজিক ন্যায়বিচার, নাগরিক নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করুন এবং অবিলম্বে মবসন্ত্রাস নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা নিন।”

বিবৃতিতে যারা সই করেছেন তারা হলেন, অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম (রফিক শাহরিয়ার), অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ, অধ্যাপক ড. জামিলা এ চৌধুরী, শবনম আযীম, অধ্যাপক ড. আবু সারা শামসুর রউফ, অধ্যাপক ড. সমীর কুমার শীল, অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল মুহিত, অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদার, অধ্যাপক ড. আকসাদুল আলম, অধ্যাপক ড. সঞ্চিতা গুহ, অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার, অধ্যাপক ড. জাভীদ ইকবাল বাঙালী, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, অধ্যাপক ড. বিল্লাল হোসেন, অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির, অধ্যাপক ড. মামুন আল মোস্তফা, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সুব্রত সাহা, ড. নীলিমা আকতার, অধ্যাপক ড. লিটন কুমার সাহা, অধ্যাপক আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান, অধ্যাপক ড. জি এম গোলজার হোসেন,

অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রহিম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ড. রাফিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো: আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ড. এ. টি. এম. সামছুজ্জোহা, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন, অধ্যাপক ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এ.কে.এম খাদেমুল হক, ড. কায়সার আহমেদ রকী ড. নাইমা নিগার, সামশাদ নওরীন, ড. এম এল পলাশ, ড. মুহাম্মদ মাইনউদ্দিন মোল্লা, মো: রাকিবুল হাসান, ড. ইসরাত জাহান, ড. মো: হাসান ফারুক, ড. মো: নাসির উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান, ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, মো: কামরুল হাসান, ড. সিদ্ধার্থ দে, মাহমুদুর রহমান, ড. মো: মাহফুজুর রহমান খান, ড. মো: রায়হান সরকার, তৌহিদ হোসেন, ড. মোহাম্মদ ইউসুফ, ড. আবদুল্লাহ আল মারুফ, ড. মো: জহিরুল ইসলাম, মো: ইব্রাহীম মিয়া, ড. আরশাদুল হাসান, ড. মো: বেলাল হোসেন, ড. আব্দুল কাদের মহিউদ্দিন, ড. মির শরিফুল ইসলাম, আহমাদ হাসান চৌধুরী, ড. মোহাইমিনুল আদীব, মো: ইমরান হোসেন, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো: নাইমুল ইসলাম, ড. মো: মতিয়ার রহমান, মাহমুদুল হাসান ও অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান।

সারাবাংলা/কেকে/ইআ

ঢাবি নীল দল বিবৃতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর