Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাতক্ষীরায় কোমরসমান পানিতে ভিজে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৬ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ২১:০৩

সাতক্ষীরা: টানা বৃষ্টিতে কোমরসমান পানিতে সাতক্ষীরার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে শহর ও আশপাশের গ্রামের শতাধিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা হাঁটু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে চলমান এইচএসসি ও অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায়। এ কারণে ভেজা কাপড় পড়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ যেন এক জলাশয়। কলেজে প্রবেশ করতেই কাদামাটি ও পচা পানির গন্ধে নাক চেপে ধরতে হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন ভেজা জামা-কাপড়ে পরে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। মনে হয় নদী পার হচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

পাটকেলঘাটা আমিরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কালীগঞ্জের মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ স্কুল, বদ্দিপুর প্রাইমারি স্কুলসহ জেলার অনেক প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।

অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভেলা, বাঁশ বা জুতা হাতে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। স্কুল মাঠগুলোতেও জমেছে পচা পানি। এরই মধ্যে বিদ্যায়লয়গুলোতে চলছে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা।

কালীগঞ্জের মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত বৈদ্য বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যালয়ের আঙিনায় হাঁটাচলা করাই দায়। শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে পরীক্ষা দিচ্ছে।’

এ দুর্ভোগের কারণে অভিভাবকরাও হতাশ। তাদের প্রশ্ন, এই দুর্যোগে সন্তানদের স্কুলে পাঠাবো কীভাবে? শিশুরা ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

জলাবদ্ধতার কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শহরতলির উত্তর কাটিয়া, ইটাগাছা, কুখরালি, ব্রহ্মরাজপুর, ঝাউডাঙ্গা, ফিংড়ি, আগরদাঁড়ি, বাঁকাল, তালতলা এলাকার প্রতিষ্ঠানগুলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রতি বছর এমন হয়, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। কলেজের ভেতরেও ড্রেনেজ নেই।’

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক শেখ আজাদ হোসেন বেলাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কাদা-পানি পেরিয়ে ক্লাসে যাচ্ছে—এটাই কি শিক্ষার পরিবেশ? দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পাঠ ও মনোবলে পিছিয়ে পড়বে।’

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ঘের মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। দ্রুত উন্নতির আশা করছি।’

জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘শুধু উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে জলাবদ্ধতার সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য স্থানীয়দের অংশগ্রহণে বাঁধ নির্মাণসহ সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।’

তিনি জানান, ‘জেলার বিভিন্ন খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা বাড়ছে। তাই খাল খননের পাশাপাশি দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।’

তথ্যমতে, সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলায় দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১৩শ’র বেশি সরকারি প্রাথমিক, ৫০০শ’র বেশি মাধ্যমিক ও ৬০টির বেশি কলেজ রয়েছে।

সারাবাংলা/এসএস

এইচএসসি কোমরসমান পানি পরীক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর