যশোর: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণি বলেছেন, জুলাই উত্তর বাংলাদেশে সকলের সহযোগিতা ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। আমাদের প্রত্যেককে তার নিজস্ব জায়গা থেকে বিবেককে কাজে লাগাতে হবে। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষ অমিত্রাক্ষরে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত সকল বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ জেলার সকল সরকারি দফতরের প্রধানদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে আমরা সকলেই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমাদের অহংকার করার কিছু নেই। আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণের সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। দিন শেষে আমাদের সকলের পরিচয় আমরা মানুষের সেবক, আমরা সকলেই বাংলাদেশি। আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণকে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিচয় আমরা সকলেই বাংলাদেশি। এখানে শ্রেণি বিভাগ করার কোনো সুযোগ নেই। বিগত ১৭ বছরে এই দেশটাকে নরকে পরিণত করা হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে হাজার হাজার নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার আত্নত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন একটি বাংলাদেশ পেয়েছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার যে পর্যায়ে দেশকে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল সেই পর্যায়ে দেশের একটা ভয়াবহ পরিণতি ঘটতে পারত। কিন্তু না আমাদের দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতা আমাদেরকে দেশ গড়ার দায়িত্ব দিয়ে তারা নিশ্চিন্তে ঘরে ফিরে গেছে। কারণ তারা এই দেশটাকে ভালোবাসে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই দেশকে নতুন করে গড়ে তোলা।’
ড. নাসিমুল গণি বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশে বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে যে রকম ঘঠনা ঘটে সে রকম কোনো বড় ধরনের ঘটনা আমাদের দেশে ঘটেনি। তাই বলে যে আর ঘটবে না সে কথা ভেবে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো ঠিক হবে না। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো আমাদের সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে ঘাপটি মেরে রয়েছে। আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। কোনোভাবেই যেন পতিত স্বৈরাচার আর ফিরে আসতে না পারে।‘
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। সভায় ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৮৮ ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার মিজানুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মাহাবুবুর রহমান মিলন, সেনাবাহিনীর যশোর কমান্ডের কোম্পানি কমান্ডার, ৪৯ বিজিবির কোম্পাণ কমান্ডার, র্যাব-৬ এর যশোর সিপিসি-৩ এর কমান্ডার, যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের সিইও আসাদুজ্জামান, ডিডিএলজি রফিকুল হাসান, এডিসি রেভিনিউ সুজন সরকার, এডিএম কমলেশ মজুমদার, সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ হাসানসহ জেলার সকল সরকারি দফতরের দফতর প্রধানরা এবং সকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সকল থানার অফিসার ইনচার্জরা উপস্থিত ছিলেন।