পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্দুকধারীরা বাস থেকে নামিয়ে অন্তত ৯ যাত্রীকে অপহরণ করে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রাদেশিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা শুক্রবার (১১ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) রাতে বেলুচিস্তান থেকে পাঞ্জাবগামী দুটি যাত্রীবাহী বাস জোব জেলা নামক এলাকায় থামিয়ে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে ৯ জন পাঞ্জাবি যাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বন্দুকধারীরা। পরদিন সকালে তাদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পার্বত্য এলাকায় উদ্ধার করা হয়।
জোব জেলার লেভিস বাহিনীর এসএইচও ইয়াসিন মন্দোখেল বলেন, ‘নিহতদের মরদেহ রখনি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।’
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানান, ঘটনার পরই নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করে, তবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এখনো কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে এর আগে এমন হামলার সঙ্গে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর জড়িত থাকার ঘটনা রয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘নিরীহ মানুষের রক্ত বৃথা যাবে না। ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা পরিচালিত এই বর্বরতা উন্মুক্ত সন্ত্রাস।’
ভারতের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, বেলুচিস্তান পাকিস্তানের বৃহত্তম কিন্তু সবচেয়ে পশ্চাদপদ প্রদেশ। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী এই খনিজসমৃদ্ধ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ চলছে। বেলুচ যোদ্ধারা কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রদেশটির সম্পদ লুটপাট করে পাঞ্জাবে ব্যয় করার অভিযোগ করে আসছে। তবে সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বেলুচিস্তানের উন্নয়নে তারা কাজ করছে।
গত বছর আগস্টে একই ধরনের হামলায় প্রায় ২৪ যাত্রী নিহত হয়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বেলুচিস্তানের বারখান জেলায় বাস থামিয়ে সাতজন পাঞ্জাবি যাত্রীকে হত্যা করে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। মার্চে বোলান পাসে একটি ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত হয় ২৩ সেনাসদস্য, তিনজন রেল কর্মচারী এবং পাঁচজন যাত্রী।