ঢাকা: দেশের অর্থনীতির কঠিন করুণ অবস্থা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনায় দুঃস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির করুণ অবস্থা চলছে। এটা শুধু মুখের কথা নয়, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা, এটা এখন মানুষের মনে মনে। যদি আমরা দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাই, শুনতে পাই, তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি একটি বৃহত্তর আদর্শের পক্ষে সংগ্রাম করে আসছে। আমরা মানবিকতা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। এই আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন চিরায়ত ও খাঁটি গণতন্ত্র। আমাদের এই লড়াই মূলত জনগণের ওপর জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার সংগ্রাম।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জনগণের সরকার থাকলে প্রতিটি সিদ্ধান্তে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু, বর্তমানে সেই জবাবদিহিতার বালাই নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকেও জনসমর্থিত মনে করি। কারণ, আওয়ামী লীগ ও তাদের কয়েকজন মিত্র ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এই সরকারের পক্ষে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা সবাই সমর্থন জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমরা চারদিকে দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দেখতে ও শুনতে পাই, তাহলে জনগণ আমাদের দায়ী করবেই। কারণ আজ অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতেও না পারে, তাহলে দুর্ভিক্ষের বাস্তবতা এসে দাঁড়াবে। আর তখন কেউই রেহাই পাবে না—তবু কিছু পতিত ফ্যাসিস্ট হাততালি দিয়ে যাবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেসব দোসর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে নামমাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান জড়িয়ে পড়লেও, সরকার চাইলে সহজেই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সেগুলো পরিচালনা করতে পারে। গার্মেন্টস শিল্প যেন বন্ধ না হয়, সে জন্য প্রয়োজন হলে সরকার নিজেই এগিয়ে আসতে পারে। যারা দোষী, তাদের বিচারের আওতায় আনুন; কিন্তু শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা যেন ধ্বংস না হয়। কারণ, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ভয়াবহ।’
তিনি আরও বলেন, আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি—তবে কর্মসংস্থান বাড়ানো না গেলে জনগণের ক্ষোভ থেকে কেউই রেহাই পাবে না।’
সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি কখনোই সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলেনি; বরং আমরা সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছি। আপনারা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, আমাদের ৩১ দফায় তার অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত আছে। এমনকি জুলাই সনদের অনেক বিষয়ও আমরা গ্রহণ করেছি। তবে এটিকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতেই হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে-বিদেশে আরও সংস্কার আসবে, এটাই স্বাভাবিক।’