ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠনের আর কোনো সুযোগ নেই। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা এখনো চলমান রয়েছে এবং নির্বাচন তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত সে আলোচনা খোলা থাকবে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কৌশলগত কারণে অতীতে জোট হয়েছিল, কিন্তু এবার আর সেই প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে না।’
সালাহউদ্দিন জানান, বিএনপি এখন শুধু তাদের সঙ্গে জোট গঠনের দিকে মনোযোগী, যারা একযোগে আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলবে। কী হয়, তা সময়ই বলে দেবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যেই এই আলোচনা শেষ হওয়া উচিত ছিল। দীর্ঘসূত্রতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।”
এসময় তিনি জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই মনে করছেন তারা। এখন কেবল আপিল বিভাগের রিভিউ রায়ের অপেক্ষা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই রায়ে জনগণের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হবে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সালাহউদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশে এখনো এই ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি।” তার মতে, এই পদ্ধতিতে জনগণ সরাসরি তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না, ফলে গণতন্ত্র দুর্বল হয় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে।
তিনি বলেন, “পিআর ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের বিজয়ের সুযোগ থাকে না। এটি অগণতান্ত্রিক ও জনগণের রায়ের প্রতি অসম্মানজনক।”
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তারা আদর্শ হারিয়ে অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্র তাদের রক্তে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মান জানাই, কিন্তু জনসমর্থনই প্রকৃত রাজনৈতিক ওজন নির্ধারণ করে। ছোট দলগুলো বড় বড় কথা বললেও তারা খুব অল্পসংখ্যক মানুষের প্রতিনিধি।”
জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছালে ৫ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, “সরকার এই ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নিয়েছে। এখন ঐকমত্য হলেই ৫ আগস্ট এটি ঘোষণা করা সম্ভব হবে।”