Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নানা প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে অনামিকা লাবনীর এসএসসি জয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১১ জুলাই ২০২৫ ২২:১৮ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ২২:২৯

এসএসসি পাস করে অনামিকা রাণী লাবনী ও তার পরিবারের উচ্ছ্বাস। ছবি: সারাবাংলা

গাইবান্ধা: সামাজিক অবহেলা, দারিদ্র্য ও যোগাযোগ সমস্যাকে জয় করে এসএসসি পাস করেছে গাইবান্ধার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কিশোরী অনামিকা রাণী লাবনী। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি গ্রামের দরিদ্র পানের দোকানদার বীরেন্দ্র নাথ সরকার ও গৃহিণী সাবিত্রী রাণীর বড় মেয়ে লাবনী এবারে মানবিক বিভাগ থেকে ৩.০৬ জিপিএ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

লাবনী ও তার ছোট বোন নন্দিনী রাণী নিপা স্থানীয় খামার ধুবনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। নিপা বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। দুই বোনই জন্ম থেকে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক বা সহযোগিতা না পেয়ে তারা মূলধারার স্কুলেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিদ্যালয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে তারা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। শিক্ষকরা তাদের ইশারা-ইঙ্গিত বুঝতে না পারায় ক্লাসে সঠিকভাবে পাঠদানের সুযোগ পায় না। সহপাঠীদের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ হয় না। তদুপরি, পরিবারের আর্থিক দৈন্য এবং গৃহশিক্ষকের অভাবেও তাদের শিক্ষা জীবন বারবার বাধাগ্রস্ত হয়।

লিখিতভাবে কাগজে মতামত জানিয়ে লাবনী জানায়, “স্যাররা আমাদের কিছু বোঝেন না, আমরা কী চাই তাও জিজ্ঞেস করেন না। কোনো বৃত্তিও পাইনি। এমনকি আমাদের প্রতিবন্ধী ভাতাও মেলে না।”

এদিকে, লাবনীর জন্মনিবন্ধন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদপত্রের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও সুবর্ণনাগরিক (স্মার্ট) পরিচয়পত্রে নামের বানানেও রয়েছে ব্যাপক ভুলত্রুটি।

বীরেন্দ্র নাথ সরকার-সাবিত্রী রাণী সরকার দম্পতি জানান, দরিদ্র সংসারে ২ মেয়ের ইচ্ছানুযায়ী লেখাপড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ দেয়া খুবই কঠিন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন অনামিকা রাণী লাবনী ও নন্দিনী রাণী নিপার অবস্থাগত বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত গরীব পরিবারে জন্ম নেয়া ২ বোন ওরা অত্যন্ত মেধাবী। কিন্তু এরা একদম কানেও শোনেনা আবার কথাও বলতে পারেনা। আমরা যোগাযোগ ঘাটতির কারণে ওদেরকে শিক্ষা দিতে বা পাঠদানে ব্যর্থ। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও শিক্ষাসামগ্রী না থাকায় আমরা অসহায়। এদের কাগজপত্রেও ভুল আছে, সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।’

সারাবাংলা/এসএস

অনামিকা লাবনী এসএসসি জয় প্রতিবন্ধী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর