ঢাকা: মালয়েশিয়ার পুলিশ কর্তৃক সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার সাথে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন শুক্রবার (১১ জুলাই) কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে এ কথা বলেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানানো হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তথ্য ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের তদন্তে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন।
এই সময় মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের সুযোগ এবং সহযোগিতা সহজতর করার আশ্বাস দেন।
এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামির সাথে সাক্ষাৎ করেন। এই সময় দুই নেতা বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষই বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি-পরবর্তী সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিজিথা হেরাথ এবং কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান পার্ক ইউনজুর সাথেও সাক্ষাৎ করেন। যেখানে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গেল ২০০৬ সালে এআরএফ-এর সদস্য হয়। যা নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে প্রতিষ্ঠিত একটি ফোরাম। এটি ২৭ জন সদস্যের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি করে, যার মধ্যে বৃহত্তর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ এআরএফ-এর দুটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র, “সন্ত্রাসবাদ দমন এবং আন্তঃজাতিক অপরাধ” এবং “দুর্যোগ ত্রাণ”-এর সহ-সভাপতিত্ব করছে। এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরবর্তী অধিবেশন ২০২৬ সালে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে জাতীয় বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে তিনি জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব বিবেচনা করে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান সদস্যদের বাংলাদেশের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টাকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান। এই সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহাপরিচালক মো. শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।