নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত, বাড়ছে জনদুর্ভোগ

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার সদর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে এবং পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকায় এখনো নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পানি ধীরগতিতে নামায় এই জনদুর্ভোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টির ফলে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, রেললাইন-সংলগ্ন এলাকা, মোক্তার মসজিদ, জেলা জজ আদালত সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার, আল ফারুক একাডেমি, হাউজিং বালুর মাঠসহ এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে আশপাশের অনেক বাসাবাড়িতেও পানি জমে আছে।

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষ করে, সদর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এলাকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। অনেকেই নিজ বসতঘরে পানির কারণে রাত্রি যাপন করতে পারছে না। এর মধ্যে সাপের আতঙ্কও রয়েছে। ভারী বৃষ্টির ফলে পুকুর ও মাছের ঘের ডুবে গেছে। বিভিন্ন খামারে মারা গেছে অনেক মুরগি। এদিকে, আমনের বীজতলা ও শাকসবজি ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে।

হাসপাতাল রোড় এলাকার বাসিন্দা ওসমান মিয়া বলেন, কয়েদিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।

নোয়াখালী জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এবং ১৭১টি গবাদি পশু। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৯টি কাজ শুরু করেছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বসতঘরের পানি নামছে ধীরগতিতে, জনদুর্ভোগ চরমে। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। তবে, আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পানি চলাচলের পথগুলো সচল করতে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি আর না হলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।