Saturday 12 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘একটি দলের চাঁদাবাজি আওয়ামী লীগকেও হার মানিয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৪ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৬

চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকার চকবাজারে ব্যবসায়ী লালচাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা, চাঁদাবাজি এবং ধর্ষণের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে আলাদাভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির। এক সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেছেন, বিপ্লব পরবর্তী একটি দলের চাঁদাবাজি আওয়ামী লীগকেও হার মানিয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে নগরীর জিইসি মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

ছাত্রশিবির নেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছিলাম। আমরা স্বৈরাচার হাসিনাকে এদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছিলাম। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, এদেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এদেশের বিভিন্ন জায়গায়, গ্রামগঞ্জে, শহরে-বন্দরে নতুন করে চাঁদাবাজের আবির্ভাব হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনীর পতনের পর আরেকটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি হয়েছে। আমরা হাসিনার সময় যে নৃশসংতার দেখেছিলাম, সেই নৃশংসতা এখন দেখিয়েছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা এই সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরির জন্য রক্ত দিইনি। এই বীর চট্টলা ফুঁসে উঠেছিল চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে। আমরা ছাত্রলীগকে বীর চট্টলা ছাড়তে বাধ্য করেছিলাম। ছাত্রলীগের প্রতাপশালী সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রাম ছাড়তে বাধ্য করেছিলাম। আমরা বড় বড় গুণ্ডাদের এদেশ থেকে তাড়িয়েছি। একটাই উদ্দেশ্য ছিল, এদেশের মানুষকে শান্তিতে বাস করতে দেব।’

‘কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে একটি দল গ্রামেগঞ্জে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তাদের চাঁদাবাজি আওয়ামী লীগকেও হার মানিয়েছে। আওয়ামী লীগ গ্রামের গরীব মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিত না। কিন্তু বিএনপির সন্ত্রাসীরা সেই ইতিহাসকেও নতুনভাবে তৈরি করছে। এখন মানুষ বলতে বাধ্য হচ্ছে- চাঁদা তুলে পল্টনে, দশ পারসেন্ট যায় লন্ডনে।’

মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, ‘কোনো চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীর জায়গা এদেশে হবে না। প্রয়োজনের চব্বিশের মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ, দেশের শত্রু, জাতির শত্রুদের আগামীদিনে ছাত্রশিবির দেশ থেকে বিতাড়িত করবে ইনশল্লাহ।’

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে অস্ত্র ছিল না। মানুষ পাথর কেটে অস্ত্র তৈরি করত। আমাদের ভাই সোহাগের বুকে–পিঠে পাথর দিয়ে একের পর এক আঘাত করা হয়েছে। এই লাশের ওপর নৃত্য করা হয়েছে। এ ঘটনার বিচার করতে হবে।’

ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি তানজির হোসেন বলেন, ‘সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা যে দলেরই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

সমাবেশের আগে নগরীর মুরাদপুর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা জিইসি মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন।

এদিকে দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নগরীর বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।

দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জামায়াত নেতারা বলেন, ‘খুন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারণে অতীতের ফ্যাসিবাদি-স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে দেশের জনগণ। নতুন করে কেউ আবার স্বৈরাচার হয়ে উঠলে জনগণ বরদাশত করবে না। নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যা, ধর্ষণ এবং চাঁদাবাজি-দখলবাজির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, সদস্য আবদুজ জাহের ও মোস্তাক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী ডা. এ. কে এম ফজলুল হক এসব সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসআর

আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম চাঁদাবাজি ছাত্রশিবির জামায়াতে ইসলামী বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর