রাজবাড়ী: মিটফোর্ডে পাথর মেরে ব্যবসায়ী সোহাগকে বর্বরোচিত হত্যাসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে শহরের জেলা স্কুলের সামনে থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী পৌর শাখা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি জেলা শাখার যৌথ আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
বিক্ষোভকারীরা মিছিলে ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ‘রক্তে ভেজা আমার ভাই, খুনি তোমার রেহাই নাই’, ‘লীগ গেছে যেই পথে, দল যাবে সেই পথে’, ‘এক-দুই-তিন-চার, চাঁদাবাজ দেশছাড়’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
মিছিলটি শহরের পান্না চত্বর ঘুরে রেলগেট হয়ে বড় বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে ১ নম্বর রেলগেট শহিদ স্মৃতি চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নেতাকর্মীরা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাইয়েদ জামিল, এনসিপির বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি পলাশ খান আব্দুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর মাহমুদ সুজন , জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি কারী আবু ইউসুফ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখার সহ-সভাপতি হাফেজ মো. বেলাল হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আব্দুর রহিম আল মাহমুদ সুমন, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক মওলানা ফরিদ উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী সরকারি কলেজে শাখার সভাপতি আব্দুল আলীম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মিটফোর্ডের চাঁদার জন্য ব্যবসায়ী সোহাগকে পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে যুবদল নেতাকর্মীরা। হত্যা করে তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি লাশের ওপর বর্বর নিত্য করেছে- এটা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের চিত্র। বাংলাদেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
বক্তারা আরও বলেন, ছাত্রজনতা প্রয়োজনে আবার রক্ত দেবে, তবুও এই বাংলাদেশে কোনো ধরনের স্বৈরাচারের আশ্রয় হবে না। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুসজ্জিত পুলিশ বাহিনী থাকার পরও তাদের পতন হয়েছে। সুতরাং, যারা অবাধে এ দেশে এ ধরনের নৃশংসতা চালাচ্ছেন, তাদের লাগাম ধরতে ছাত্রজনতার এক মুহূর্তও বিলম্ব হবে না।
তারা বলেন, একজন ব্যবসায়ী চাঁদা দেয়নি বলে পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমরা কী নতুন করে আবার আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে ফিরে গেলাম? আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে লাশের ওপর নৃত্য করেছিল। এখন বিএনপির একটি অঙ্গ সংগঠন সেটি ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলে, কারা ক্ষমতায় আসবে এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
তারা আরও বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই না। ২০০৬ সালের লগি-বইঠার তাণ্ডব ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে যদি ফের কেউ আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তাহলে অবস্থা আওয়ামী লীগের মতোই হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে চব্বিশ এক ফ্যাসিবাদের বিদায় ঘটিয়েছে।
বক্তারা বলেন, এই বাংলায় আবারও যদি কেও অতীতের মতোই ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে চায়, বাংলার ছাত্রজনতা ঘরে বসে থাকবে না। মধ্যযুগীয় কায়দায় এই রকম নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এমন শাস্তি দেওয়া হোক যেন দ্বিতীয়বার কেও এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।