ঠাকুরগাঁও: জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্খিত ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপি।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনের বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পয়গাম আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে শেষে ২য় অধিবেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর কাউন্সিলরদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে বিকাল সাড়ে টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ৪৯০ জন ভোটারের মধ্যে ৪৮৮ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শেষে সমীর উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ৩য় তলার একটি কক্ষে প্রার্থী এবং পুলিং এজেন্টদের উপস্থিতিতে ভোট গণনাকালে প্রাথমিকভাবে সভাপতি পদে এ্যাড. মো. সৈয়দ আলম ছাতা মার্কায় ২৪১ ভোট এবং আবু হায়াত নুরন্নবীর চেয়ার মার্কায় ২৪২ ভোট পাওয়া যায়। চারটি ভোট বাতিল ও একটি ভোট অপর প্রার্থী চশমা মার্কায় পাওয়া যায়। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দায়িত্বরত নেতারা পুনরায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাইকালে বাতিলকৃত চারটি ভোট হতে একটি ভোট ছাতা মার্কার পক্ষে গৃহিত হলে সর্বশেষ ছাতা মার্কা ও চেয়ার মার্কা সমান সংখ্যক ২৪২টি ভোট গণনায় পাওয়া যায়। এ সময় উভয় পক্ষের এজেন্টগণ কোনরূপ আপত্তি করেনি। পরে অন্যান্য দুইটি পদের ভোট গণণা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
তিনি আরও বলেন, পরক্ষণেই এক পর্যায়ে প্রার্থীগণ চুড়ান্ত ফলাফল শীটে তাদের পক্ষে ফলাফল সই করে ঘোষণার জন্য নির্বাচনের দায়িত্বরত নেতাদেরকে চাপ সৃষ্টি করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, লাঞ্চিতসহ মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দেন। তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু প্রার্থী এ্যাড. মো. সৈয়দ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. টিএম মাহবুবুর রহমানসহ তাদের সমর্থকরা দায়িত্বরত নেতাদেরকে গণনাকক্ষে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। গণনাকক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলনের প্রধান অতিথি মির্জা ফয়সল আমিনকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হলে তিনি দলের নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা এবং অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে গণনা কক্ষে ছুটে আসেন এবং নেতাদেরকে মুক্ত করে আনেন।
সম্মেলনে নির্বাচনের কোনো ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। এর পরপরই প্রধান অতিথি তিনতলা থেকে নিচতলায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই এ্যাড. মো. সৈয়দ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে তাদের উশৃংখল সমর্থকগণ তাকে লক্ষ্য করে লাঠিসোঠা চেয়ার দিয়ে হামলা এবং তাকে বহনকারী গাড়ি ভাংচুর করলে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ পরিস্থিতিতে বালিয়াডাঙ্গী শাখা বিএনপির সকল পদের ফলাফল স্থগিত করে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পয়গাম আলী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. পয়গাম আলী, সহ সভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান হান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ, দফতর সম্পাদক মো. মামুন অর রশিদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মো. রাশেদ আলম লাবু, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম সোহাগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মো. মাসুদুল আলম মুন্না, সদস্য সচিব মো. কামরুল ইসলাম কামুসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।