ঢাকা: জরুরি অবস্থা ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
রোববার (১৩ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১২তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদন যুক্ত করতে হবে।’
আলী রীয়াজ জানান, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত সংবিধানের বিদ্যমান অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) এ সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো- অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধনের সময় ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগের’ শব্দগুলির পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার প্রতি হুমকি বা মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘জরুরি অবস্থা ঘোষণা সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা অথবা তার অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় উপনেতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
এছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে সব দল একমত হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এ ব্যবস্থার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে কমিশনের পূর্বপ্রস্তাবও সংশোধন করা হতে পারে।
জাতীয় সনদের ইস্যুতে তিনি জানান, সংলাপে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, জুলাই মাসের শেষ নাগাদ একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে পারব।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে আপাতত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বজায় রাখার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল আপাতত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগে একমত হয়েছে। তবে প্রথম দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মধ্যে একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে জনগণের মতামত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো জনম্যান্ডেট পায়, তাহলে ভবিষ্যতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে জ্যেষ্ঠতমের পরিবর্তে জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্যে থেকে একজনকে নিয়োগের বিধান সংযুক্ত করা যেতে পারে বলেও জানান তিনি।