ঢাকা: জরুরি অবস্থা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সর্বসম্মতভাবে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য জাবেদ রাসিম।
রোববার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
জরুরি অবস্থার ধরণ নির্ধারণের প্রস্তাবে জাবেদ রাসিম জানান, এনসিপি জরুরি অবস্থা তিনটি ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছে, প্রথমত যুদ্ধ, দ্বিতীয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারি এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি হুমকি।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পরিবর্তে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে যদি জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি দেখা দেয় সেই ক্ষেত্রে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবে।।
তিনি আরও বলেন, জরুরি অবস্থার সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তাই এক্সিকিউটিভের কাছেই ক্ষমতা থাকা উচিত। তবে সিদ্ধান্তটি যেন এককভাবে না হয়ে মন্ত্রিসভার মাধ্যমে হয়, এ বিষয়ে আমরা একমত।
জাবেদ রাসিম বলেন, জরুরি অবস্থা জারির আগে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতার মতামত বিবেচনার বিষয়ে এনসিপি প্রস্তাব দিয়েছে। বিরোধী দলীয় নেতা বৈঠকে উপস্থিত থেকে মতামত দিতে পারেন। তিনি যদি পরে তার বিপরীত বক্তব্য দেন, সেটিরও রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক প্রভাব থাকবে।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে আমরা বলেছি, কর্মে প্রবীণতম আপিল বিভাগের বিচারপতিকেই রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন। তবে এখানে দুইজন জ্যেষ্ঠ থাকলে কারা বিবেচনায় আসবেন, তা নিয়ে মতভেদ হয়েছে। কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে—‘কর্মে প্রবীণতম’ বিচারপতিকেই প্রধান বিচারপতি করা হবে। তবে সংবিধান সংশোধন করে ভবিষ্যতে সরকার চাইলে এ বিধান বদলাতে পারবে।
জাবেদ রাসিম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি রূপরেখা আমরা কমিশনের কাছে দিয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিচারাঙ্গনের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে নিষ্পত্তি করায় আমরা তার বিরোধিতা করেছি। বিচারাঙ্গনকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ না করে নিরপেক্ষ রাখা উচিত। আমরা চাই না, বিচারব্যবস্থা রাজনীতির অংশ হোক।